বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত অবদান রাখলেন সাকিব আল হাসান। খেললেন ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। ব্যাটে-বলে অনন্য নৈপুণ্য দেখানোর সুবাদে টেস্টের পর ওয়ানডে সিরিজও এলো হাতের মুঠোয়।
প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিলেন ১৫৫ রানের বিশাল জয়।
হলো না সাকিবের দশম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। বাঁহাতি অলরাউন্ডার অপরাজিত থেকে গেলেন ৯৬ রানে। ৯৬ – সংখ্যাটা সাকিবের ক্যারিয়ারে বিশেষ গুরুত্বই দাবি করবে। এ নিয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে চারবার ৯৬ রানে থেমেছে সাকিবের ইনিংস। হয় আউট হয়ে গেছেন, নতুবা ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে দুবার দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন, দুবার দলকে হারতে দেখেছেন সাকিব।
ঠিক ৯৬ রানে ইনিংস শেষ হয়েছে, এমন হিসাবে বিশ্বে সাকিবের চেয়ে এগিয়ে আর কেউ নেই। তার সমান চারবার ৯৬ রানে থেমেছে জিম্বাবুয়েরই কিংবদন্তি গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারের ইনিংস। ৩ বার ৯৬ রানে থেমেছেন পাঁচজন।
জিম্বাবুয়ে: ২৪০/৯ (৫০ ওভার), বাংলাদেশ: ২৪২/৭ (৪৯.১ ওভার)
মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে। স্বাগতিকদের তাদেরই মাটিতে প্রথমবার হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। টাইগাররা জিম্বাবুয়ের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জিতল ১২ বছর পর।
২০০৯ সালের পর জিম্বাবুয়েতে ওয়ানডে সিরিজ জেতা হয়ে উঠছিল না বাংলাদেশের। ২০১৩ সালে অনেক আশা নিয়ে গিয়েও ফিরতে হয়েছিল ২-১এ হারের হতাশা নিয়ে। এবার তেমনটা হল না। সিরিজ নিশ্চিত, এখন হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন তামিমদের।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে জিম্বাবুয়েকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৫ বল হাতে রেখেই ২৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ফেলে সফরকারীরা।
ব্যাট হাতে ছন্দে ছিলেন না সাকিব। সমালোচনাও হচ্ছিল। জবাবটা দিলেন ম্যাচ জেতানো ইনিংসেই। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরিটা হয়ত ছুঁতে পারতেন। ঝুঁকি নেননি। খেলেছেন জয়ের জন্য। আরেক অপরাজিত মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে সুযোগ দিয়েছেন, হয়েছে দারুণ এক জুটি।
২০১৯ বিশ্বকাপে টন্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন সাকিব। তবে হারারেতে এদিন তার ১০৯ বলে হার না মানা ৯৬ রানের ইনিংসটি যেন সেঞ্চুরির চেয়েও বেশি কিছু।
সাকিবের ইনিংসের চারের মার ছিল আটটি। ইনিংসের দশম ওভারে তামিম ইকবাল আউট হওয়ার পর নেমেছিলেন ২২ গজে। ফিরেছেন বাউন্ডারিতে দলকে জয় উপহার দিয়েই।
সহজ লক্ষ্য টপকানো খুব কঠিন হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের সামনে। আশার বাতি হয়ে জ্বলে গেছেন সাকিব।
১৭৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে হারের মুখে যখন বাংলাদেশ, সাকিব তখন সাইফউদ্দিনকে নিয়ে গড়েন জুটি। অষ্টম উইকেটে তাদের ৬৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে শেষটা করে আসে বাংলাদেশ। হাতে রয়ে যায় অক্ষত ৫ বল। ২৮ রানে সাউফউদ্দিন থাকেন অপরাজিত।
ওপেনিং জুটিতে তামিম ও লিটন দাসের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল ২৪১ তাড়া করে জিততে তেমন বেগ পেতে হবে না বাংলাদেশকে। তাদের ৩৯ রানের জুটি ভাঙার পর দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে সফরকারীরা।
৩৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে সহজ ম্যাচ কঠিন করে তোলে বাংলাদেশ। দলীয় ৭৪ রানের মাথায় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (৫) রান আউট হয়ে ফেরেন সাজঘরে।
ছয় ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরায় কঠিন হয়ে যায় বাংলাদেশের পথ। ২৬ রান করে সাজঘরে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আরও কঠিন হয়ে যায় পথ। মেহেদী হাসান মিরাজ ৬ রান করে ফেরেন। আফিফ হোসেন আশা দেখালেও ১৫ রান করে বিলিয়ে আসেন উইকেট।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান তোলে স্বাগতিকরা। ওয়েসলে মাধভেরে ৫৬ ও অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর করেন ৪৬ রান। সঙ্গে ডিওন মেয়ার্সের ৩৪ ও সিকান্দার রাজার ৩০ রানের সুবাদে আড়াইশর কাছাকাছি সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা।
বাংলাদেশের তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম নিয়েছেন ৪ উইকেট। সাকিব আল হাসান দুটি, তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিয়েছেন একটি করে উইকেট।