দেবল চন্দ্র দাস, নেত্রকোনা: নেত্রকোণার বিশিষ্ট পালাকার মিলন বয়াতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে কষ্টে দিন পার করছেন। গত কয়েকদিন আগে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার ডান হাত ও ডান পা বর্তমানে অনূভুতিহীন। এই অবস্থায় আর্থিকভাবে চরম অভাব অনটনের মধ্যেই তিনি যতটুকু সম্ভব চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
মিলন বয়াতি নেত্রকোণার সদর উপজেলার কালিয়ারা গাবরাগাতি ইউনিয়নের ছেওপুর গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে অসুস্থতার কারণে তিনি কেন্দুয়ার নোয়াপাড়ায় মেয়ের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
মিলন বয়াতি আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে গান-বাজনা, পালা অনুষ্ঠান সব বন্ধ থাকায় আরো বেশি অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করছেন। খেয়ে না খেয়ে কোনরকমে জীবন ধারণ করছেন।
তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অভাব-অনটনের মধ্যে সংসারের নানা রকম অশান্তির কারণে মানসিকভাবে তিনি অনেকটাই ভেঙে পড়েছিলেন। করোনা পরিস্থিতির আগে মাঝে মাঝে বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করতে পারতেন। সম্মানী হিসেবে যা পেতেন তাই দিয়ে সংসার চালাতেন। এখন সেই পথও বন্ধ। তিনি মনে করছেন, অভাব-অনটনের ফলে সৃষ্ট মানসিক অস্থিরতার কারণেই তার এই অসুস্থতা।
মিলন বয়াতি বিশেষ সুনামের সাথে নেত্রকোণাসহ সারা দেশে পালা গানের নান্দনিক উপস্থাপনায় ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তিনি সারা জীবন লোকসংস্কৃতির চর্চার মাধ্যমে বেঁচে থাকতে চান। কোনকালেই অর্থের প্রতি তেমন কোনো আগ্রহ ছিল না তার। পালাগান করে মানুষকে আনন্দ দিতেই বেশি ভালোবাসেন। যে কারণে সংসারে সবসময় টানাপোড়েন লেগেই থাকতো। তিনি সবসময় পালা গানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। নতুন গান বাঁধা ও পালা তৈরির মাধ্যমে নতুন সৃষ্টি নিয়ে মানুষের সামনে হাজির হতে পারাই তার চরম আনন্দ।
মিলন বয়াতি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বর্তমানে চরম এই সঙ্কটে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছ থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা পাওয়ায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও সমাজের বিত্তবানদের নিকট সাহায্যের আবেদন জানান।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান জানান, মিলন বয়াতির অসুস্থতার খবর পেয়ে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ১০হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।