আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: মাত্র ২২ ঘন্টায় বাবাকে হত্যার অভিযোগে করা মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানা পুলিশ।
তদন্ত শেষে রোববার (১ আগস্ট) দুপুর আড়াইটায় আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
বাবা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ও গ্রেফতারকৃত লুৎফর রহমান (৩০) সদর উপজেলার ভিতরশিমুল গ্রামের কদ্দুস প্রামাণিক (৬৫) এর ছেলে। তিনি পেশায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাচালক। নিহত কদ্দুস প্রামাণিক (৬৫) শিমুল গ্রামের মৃত মইদুল্লাহর ছেলে।
এর আগে শনিবার (৩১ জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটায় লুৎফরকে আসামি করে তার বড় ভাই নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় হত্যা মামলটি দায়ের করেন। মামলায় লুৎফরের বিরুদ্ধে তাঁর বাবা কদ্দুস প্রামাণিককে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার মাত্র ২২ ঘন্টায় অভিযোগপত্র জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানবীর আহম্মেদ।
তিনি জানান, সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওহাব আসামী লুৎফরকে টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনেন। সেখানে লুৎফর তাঁর বাবা কদ্দুস প্রামাণিককে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান।
মামলার বাদী নজরুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকালে পারিবারিক কারণে বাবা কদ্দুস প্রামাণিকের সঙ্গে ছোট ছেলে লুৎফরের বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় ছোটভাই লুৎফর ঘর থেকে ধারালো দা এনে তার বাবার কপালে একটি ও মাথার পেছনে দুটি কোপ দেয়। এত গুরুতর আহত হন তার বাবা। এ অবস্থায় তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, শনিববার (৩১ জুলাই) সকালে উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের ভিতর শিমুল গ্রামে ছেলের হাতে বাবা খুনের খবর পান। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মৃত কদ্দুস প্রামাণিকের লাশ উদ্ধারসহ ঘাতক ছেলে লুৎফরকে আটক করে। পরে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করাসহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
শনিবার বিকেল সাড়ে চারটায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়ের তত্ত্বাবধানে দ্রুত মামলার তদন্তকাজ সম্পন্ন করে অভিযোগপত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ ঘটনায় জড়িত ও গ্রেফতারকৃত লুৎফর জিজ্ঞাসাবাদে তার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে সম্মত হন।
পরে রোববার সকালে লুৎফরকে টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওহাব। আদালতে লুৎফর তার বাবা কদ্দুস প্রামাণিককে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পরে আদালতের বিচারক তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তিনি আরও জানান, মামলার তদন্ত শেষে রোববার দুপুর আড়াইটায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসকসহ ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।