ড্রেজারের পানিতে রাস্থা-ঘাট ডুবে শতশত মানুষ পানিবন্দি
নুরে আলম, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের পৌরএলাকার ভোলাচং গ্রামে মসজিদের জায়গা ভরাটের নামে সরকারি জায়গা ভরাট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন ভরাট কান্ডে ওই এলাকার সরকারি রাস্তায় চলাচলকারী ও স্থানীয় বসত বাড়ির শতশত মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নবীনগর পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়ায় কাদির মিয়া নামে এক ড্রেজার ব্যবসায়ী নবীনগর উপজেলা প্রশাসনের নিষেধ অমান্য করে ভোলাচং চৌধুরী পাড়া মোহাম্মদীয়া আরাবীয়া জামে মসজিদের জায়গা ভরাটের নামে নবীনগর টু কম্পানিগঞ্জ সড়কের সড়ক ও জনপদের জায়গাসহ এলাকার অনেক ফসলি জমি, ডোবা ভরাট করে ফেলছেন। এতে করে এলাকার অনেক রাস্তা ও বসত বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এলাকাবাসীরা জানান, এখন এলাকার অনেক রাস্তা ও তাদের বাড়িঘর এই ড্রেজারের পানিতে ডুবে আছে। গত একমাস যাবত এই পানিবন্দি অবস্থায় তারা এখানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় প্রাচীন ভোলাচং বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত দেড় মাস যাবত বাজারের তিনটি সড়কে ড্রেজারের পাইপ ফেলে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী করে রাখা হয়েছে। প্রশাসনের লোকজন এসে এই পাইপ সরানোর কথা বলে গেলেও তারা প্রশাসনকে উপেক্ষা করে এই বালুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর ও ভোলাচং বাজারের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন জানান, ড্রেজারের মালিক কাদির মিয়াসহ আরো কয়েকজন আমাদের কাছ থেকে দুই তিনদিনের জন্য অনুমতি নিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের চলাচলে ব্যঘাত ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাস্তার উপর পাইপ দিয়ে এলাকায় সরকারি ও ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গা বালি ভরাটের কাজ করছেন।এতে করে এলাকার সাধারণ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। প্রায় দেড় মাস যাবত পাইপ গুলো তুলে নিয়ে যাবে বলেও তারা তালবাহানা করছে।
গত এক সাপ্তাহ আগে এসিল্যান্ড মহোদয় এসে পাইপগুলো তুলে নিতে বললেও তারা এখন পর্যন্ত উঠায়নি। অথচ তারা উল্টো মসজিদের জায়গায় বালু ফেলতে দিচ্ছেনা বলে একটি কথা রটিয়ে এলাকায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগানোর উপক্রম করেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
পৌর এলাকার আরেক কাউন্সিলর আল মামুন বলেন, প্রশাসনের কাছ থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে মসজিদের নাম ভাঙিয়ে সরকারি অনেক জায়গা ও খাল ভরাট করছেন।
অভিযুক্ত ড্রেজার ব্যাবসায়ী কাদির মিয়া বলেন, এতোদিন ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গা ভরাট করেছি, এখন মসজিদের জায়গা ভরাট করছি। মসজিদের জায়গাটি ভরাট করতে দুদিন লাগবে। তারপরে আমি ড্রেজার সরিয়ে নিবো।
এ বিষয়ে নবীনগরের পৌর মেয়র এড.শিব শংকর দাসের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নবীনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, এ বিষয়ে সরজমিনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় নবীনগর পৌর সভার মেয়র এড. শিব শংকর দাস সংবাদ সম্মেলনে ডেকে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিসহ সকল কাউন্সিলর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.সফিকুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা পারভেজ হোসেন,সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল আল রোমান সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।