আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের বাসাইলে ছয়মাস বয়সি শিশু সাইমনকে ফেলে নগদ ৮ লক্ষ টাকা এবং ৪ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে স্থানীয় এক ব্যাটারীচালিত অটোচালকের সাথে পালিয়েছে প্রবাসীর স্ত্রী।
এ ঘটনায় টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারে অটোচালক মো. আতিক মিয়াকে প্রধান আসামী করে আরো চার জনের নামে মামলা দায়ের করেছে শিশু সাইমনের বড় চাচা মো. আনোয়ার হোসেন। আতিক উপজেলার কাশিল ইউপি’র কাশিল উত্তর পাড়ার আজম মিয়ার ছেলে এবং প্রবাসী’র স্ত্রী একই গ্রামের দক্ষিনপাড়ার মেয়ে।
দুধের শিশুকে ফেলে প্রবাসী স্বামীর মোটা অংকের টাকা নিয়ে অটোচালকের সাথে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবাসী’র স্ত্রীর ও বাদীর পরিবার এবং মামলা সূত্রে জানা যায়,২০১৮ সালের ডিসেম্বরে উপজেলার হাবলা ইউপি’র জিবনেশ্বর উত্তর পাড়ার ঠান্ডু মিয়ার দ্বিতীয় ছেলে প্রবাসী সাদ্দাম হোসেন বিয়ে করেন। প্রায় একযুগ যাবত সিংঙ্গাপুর থাকার সুবাদে বিয়ের সময়ে সাদ্দাম তার স্ত্রীকে প্রায় ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উপহার দেন। এরই মাঝে তিনি পুনরায় সিঙ্গাপুর চলে যান। ২০২১ সালের জানুয়ারীর শেষের দিকে এই দম্পতি’র ঘরে একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়।
পূর্ব পরিচিত আতিকের অটোতে চলাচলের সুবাদে প্রবাসী’র স্ত্রীর সাথে আতিকের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। প্রায়ই সে এই বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে। সাইমনের জন্মের পর সাদ্দাম তার এলাকায় জমি ক্রয়ের জন্য ব্যাংকে গচ্ছিত টাকাগুলো বাড়িতে তার স্ত্রীর নিকট রাখার বিষয়টি জানতে পারে অতিক। সে প্রবাসী’র স্ত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। জুলাই মাসের ১৮ তারিখে আতিকের হাতধরে শিশু সাইমনকে রেখে নগদ টাকা ও স্বনার্লঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায় প্রবাসী’র স্ত্রী।
কয়েকদিন পর মেয়ের পরিবার মেয়েকে উদ্ধার করে এবং গ্রাম্য শালিশের মাধ্যমে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ফিরিয়ে দেবার শর্তে সাদ্দামের পরিবার মেয়েকে গ্রহন করে । এরপর টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ফেরত চাইলে আবারো সে আতিকের সাথে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সাদ্দামের বড়ভাই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের আমলী আদালতে ১৮ আগষ্ট একটি মামলা দায়ের করে।
এব্যাপারে বাদী আনোয়ার বলেন, আমার ৬ মাস বয়সি ভাতিজাকে ফেলে চলে যাবার পরো আমরা শুধুমাত্র এই দুধের শিশুর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দ্বিতীয়বার মেয়েটিকে মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরও সে চলে গেলো। সে তার গর্ভের সন্তানের কথাও ভাবলো না।তাই আমরা আইনগত ভাবেই বিবাদীদের মোকাবেলা করবো।
মেয়েটির মা হেনা বেগম বলেন, আমি এখন ওকে আমার মেয়ে বলতে চাইনা। আমাদের কথা না হোক, ওই শিশু দুধের বাচ্চাটার কথা ভেবেওতো সে ফিরে আসতে পারতো! এখন আমি এবং আমাদের পরিবারের সবাই আতিক এবং যারা এদের সাথে জড়িত সকলের বিচার ও শাস্তি চাই।
বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) হারুনুর রশীদ বলেন, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ মতে মামলা হয়েছে এবং এটি তদন্তাধিন রয়েছে। আসামীরা পলাতক। তাদের আটক করার চেষ্টা অব্যহত আছে।
ছবি: অটোচালক মো. আতিক, শিশু সাইমন ও প্রবাসী’র স্ত্রী