মেঘনা নদীতে অভিযান ৩ ড্রেজার ও ৩ বলগেট জব্দ, আটক ১৮

জ.ই বু্লবুল/ নুরে আলম: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৩টি ড্রেজার ও ৩টি বলগেট জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এ ঘটনায় জড়িত ১৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

নবীনগরে মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। মেঘনার ভাঙনে উপজেলার মানিকনগর বাজার, চরলাপাং, বড়িকান্দি, ধরাভাঙ্গা, নুরজাহানপুর, মুক্তারামপুর, সোনাবালুয়া, কেদারখোলা, বাইশ মৌজা বাজারসহ নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোর সীমানা মানচিত্র থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে উপজেলার মানচিত্র।এলাকার অধিকাংশ মানুষ ঘরবাড়ি, ফসলি জমিজমা, ব্যবসায়িক দোকানপাট মসজিদ মাদ্রাসা গ্রাম্য বাজার হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে গেছেন।তবু এই অবৈধ বালু ব্যাবসায়ীদের বালু উত্তোলন থামছেই না।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করেন। এই অভিযানে ভুক্তভোগী গ্রামগুলির মানুষ আনন্দ উল্লাস করতে দেখা গেছে।

স্থানীয় ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীরা জানান, নবীনগর থেকে প্রশাসনের লোকজন বহুবার এই ড্রেজারগুলোকে জরিমানা ও ড্রেজার জব্দ করেছেন। প্রশাসনের অভিযানে কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও পরে আবার চালু হয়ে যায় ড্রেজার।

তারা জানান, গত বছর নদী থেকে ড্রেজারে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়া নেতারাও কাকতালিয়ভাবে এই ড্রেজারের ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে যায়। এলাকার অনেক বড় বড় নেতারা মেঘনা নদীর এই অবৈধ ড্রেজার ব্যবসার সাথে জড়িত আছে বলে এলাকাবাসী জানান।

শনিবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোসারফ হোসেন উপজেলার মেঘনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তাকে সহযোগিতা করেন নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুর রশিদ ও ইন্সপেক্টর তদন্ত নুরে আলম।

এসময় ঘটনাস্থল থেকে ৩টি বালু উত্তোলন করার ড্রেজার ও ৩টি বলগেট জব্দ করা হয়। এ ছাড়াও এ ঘটনায় জড়িত ১৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, অবৈধভাবে নবীনগরের মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করলে সে যেই হোক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজকে তাদের ২০০০ লোগোসহ আটক করা হয়েছে, আগামীতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, নদীর পাড়ের মানুষের সবচেয়ে বড় দুঃখ হলো নদী ভাঙন। মেঘনার ভাঙন রোধকল্পে ২০২০ সালে ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেই নদী ভাঙন এলাকা থেকে কেউ যদি ড্রেজারে বালু উত্তোলন করেন আমাদের সেইসব প্রকল্পগুলি ভেসে যাবে। আজকের এই অভিযানকে সাধুবাদ জানাই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করে আসছে। গত বছরে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আগামী তো অভিযান অব্যাহত থাকবে

Print Friendly

Related Posts