বলা হয়, টি টুয়েন্টিতে ১৯ নম্বর ওভার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সে চিন্তা করেই শেষ দুই ওভারে ফিজ ও তিয়াগিকে বলে রেখেছিলেন আইপিএলের রাজস্থান অধিনায়ক। খেলা শেষে মুরালি কার্তিককে সে কথাই জানালেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু।
তিয়াগির জন্য জয় এটা ঠিক কিন্তু ১৯ নং ওভারে ফিজ জয়ের যে সম্ভাবনাটুকু তৈরি করে দিলেন তা যে রাজস্থান রয়্যালসের জয়ের পথটি সুগম করে দিয়েছিল। এই ওভারে অধিনায়ক সঞ্জুর হাত থেকে ক্যাচটি ফসকে না গেলে একটি উইকেটও পেতে পারতেন ফিজ।
বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। রাজস্থান ফিল্ডাররা অবশ্য দুটি ক্যাচ ছেড়েছেন মোস্তাফিজের বলে।
শেষ দুই ওভারের ম্যাজিকে ম্যাচের লাগাম পাঞ্জাব কিংস থেকে ছিটকে গেলো। ১৯নং ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে ম্যাচটিকে নিয়ন্ত্রণে এনে যে সম্ভাবনার পথ তৈরি করলেন ফিজ, সে পথেই শেষ পেরেক ঠুকলেন কার্তিক তিয়াগি। শেষ ওভারের ম্যাজিকে বদলেই গেল দৃশ্যপট। পর্যন্ত নিশ্চিত জয়ের পথে থাকা পাঞ্জাব নাটকীয়ভাবে রাজস্থান রয়্যালসের কাছে হেরে যায় ২ রানে।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) টস হেরে আগে ব্যাটিং করে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রান করে রাজস্থান। টার্গেটে খেলতে নেমে দারুণ ভাবে জয়ের পথে এগোতে থাকা পাঞ্জাব থামে ১৮৩ রানে। মোস্তাফিজদের রাজস্থান ২ রানের জয়ে মাঠ ছাড়ে হাসিমুখে।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ৬ বলে মাত্র ৪ রান। হাতে জমা ৮ উইকেট। এমন ম্যাচে দলটি হারবে স্বপ্নেও ভাববেন না কেউ। সে স্বপ্নটিই সামনে এনে দিলেন ফিজ। আর সব হিসেব উল্টে দিয়ে শেষ ওভারে নায়ক বনে গেলেন পেসার ত্যাগি।
শেষ ওভারে ক্রিজে ১৮ বলে ২৫ রান নিয়ে উইকেটে অ্যাডেন মার্করাম। অপ্রত্যাশিত ২১ বলে ৩২ রান করা নিকোলাস পুরান। তিয়াগির প্রথম বলে মার্করাম ডট দেন, দ্বিতীয় বলে মিডউইকেটে স্লগ করে নেন ১ রান। এরপরেই শুরু হয় তিয়াগির ম্যাজিক। তৃতীয় বলে থার্ডম্যান অঞ্চলে খেলতে উইকেটরক্ষক সঞ্জু স্যামসনের হাতে ধরা পড়েন পুরান। পাঞ্জাবের ভয়ের তখনো কিছু ছিল না। ৩ বলে প্রয়োজন ছিল ৩ রান। কিন্তু দীপক হুডা চতুর্থ বলে কোনো রানই নিতে পারেননি। পঞ্চম বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ধরা পড়েন সেই স্যামসনের হাতেই। শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩ রান। পাঞ্জাব ব্যাটসম্যান ফ্যাবিয়ান অ্যালেন বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি। কোনো রানই হলো না। রাজস্থান জিতে যায় ২ রানে।
পাঞ্জাবের হয়ে ওপেনিং জুটিতে সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ গড়েন লোকেশ রাহুল (৪৯) ও মায়াংক আগারওয়াল (৬৭)। পরে মার্করাম-পুরান সঠিক পথে থাকলেও জয় এনে দিতে পারেননি। পুরান ৩২ রান আউট হন আর মার্করাম ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
প্রথম ৩ ওভারে ২৮ রান দিয়ে কোনো উইকেট না পাওয়া তিয়াগি শেষ ওভারে ২ উইকেট নিয়ে মাত্র ১ রান দেন। ১টি করে উইকেট নেন চেতন সাকারিয়া ও রাহুল তেওয়াতিয়া। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য। তবে তার বলে দুটি ক্যাচ ড্রপ হয়।
এর আগে এভিন লুইস (৩৬), জশ্বস্বী জয়সওয়াল (৪৯) ও মাহিপাল লামরোরের (৪৩) ব্যাটে চড়ে রাজস্থান ১৮৬ রানের টার্গেট দেয়। পাঞ্জাবের হয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন আরশদীপ সিং। ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে তিনি ৫ উইকেট নেন। টি-টোয়েন্টিতে এটি আরশদীপের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ম্যাচসেরার পুরষ্কার ওঠে শেষ ওভারের নায়ক তিয়াগির হাতেই।