গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে চাকমা জাতিসত্তার নাট্যদল “হিল রিবেং থিয়েটার”

গঙ্গা যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে এই প্রথমবারের মতো চাকমা জাতিসত্তার নাট্যদল হিল রিবেং থিয়েটার অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে গত ১ অক্টোবর থেকে সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে এবারের “গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব”।
উৎসবের তৃতীয় দিন ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে “হিল রিবেং থিয়েটার”- এর নাটক “গঙ্গা মা” মঞ্চস্থ হবে। “গঙ্গা মা” নাটকটি চাকমা লোককাহিনী অবলম্বনে রচিত। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় আশিক সুমন।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর “হিল রিবেং থিয়েটার:-এর যাত্রা শুরু হয়। এটি পার্বত্য চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটির একটি নাট্যদল। এদিন এক জাঁকজমক অনুষ্ঠান ও নাটক মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে রাঙ্গাাটিতে হিল রিবেং থিয়েটার তার পথচলা শুরু করে। যাত্রার পর থেকেই “গঙ্গা মা” নাটকটির চারটি মঞ্চায়ন করা সম্ভব হয়েছিল। তারপর অতিমারির কারণে নাট্যযাত্রায় বিরতি হয়। ৩ অক্টোবর “গঙ্গা-যমুনা” উৎসবে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে থিয়েটারটি আবারও তাদের শৈল্পিক পদচারণা শুরু করতে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, চাকমা জাতিসত্তার লোককাহিনীর অন্যতম এক দুঃখগাঁথাকে কেন্দ্র করে এই নাটকটি নির্মাণ করা হয়েছে। চাকমা নিজস্ব সংস্কৃতি এবং আধুনিক থিয়েটার এর মিশেলে নাটকটির নির্দেশনার কাজ সম্পন্ন করেছেন আশিক সুমন।
নাটকটিতে আলো, মঞ্চসজ্জা এবং চাকমা সংস্কৃতির রঙিন পোশাক প্রপসের উপস্থাপন নাটকটিকে অন্য এক মাত্রা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে নাটকটির নাট্যকার ও নির্দেশক আশিক সুমন বলেন, “গঙ্গা মা” নাটকটির পটভূমি মিথ আর বাস্তব জীবনের মিশেলে নির্মিত হয়েছে-যা দর্শককে লৌকিক অলৌকিকের এক কল্পলোকে নিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। নাটকটিতে বর্ণনাত্মক নাট্য অভিনয় রীতির প্রয়োগ করেছি। চাকমা নাটকের যেহেতু একটি নিজস্ব স্বাদ-গন্ধ আছে সেহেতু সেটাকে সাথে করে নিয়ে আধুনিক থিয়েটারের উপাদান সংযুক্ত করে নাটকটির নির্দেশনার কাজটি করার চেষ্টা করেছি। বাচিক অভিনয়ের সাথে আঙ্গিক অভিনয়টাও দর্শক আর অভিনেতার মাঝে একটা সম্পর্ক স্থাপন করবে বলে মনে করি।“হিল রিবেং থিয়েটার” এর অভিনেতাদের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় “গঙ্গা মা” নাটকটি দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে এবং গঠনমূলক সমালোচনায় ঋদ্ধ হবে এই আশা রাখি।”

ইতিমধ্যেই “গঙ্গা মা” নাটকটি নাট্যমোদী দর্শকের মাঝে সাড়া ফেলেছে। নাটকটির প্রযোজনা অধিকর্তা রুনেল চাকমা। চাকমা ভাষায় নাটকটি অনুবাদ করেছেন সুগত চাকমা। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন: কথক- এলি চাকমা, মনানি- মনিষা চাকমা, কুম্বলিনি- রিয়া চাকমা/ রিশা চাকমা, সর্পদেবতা- নিকেল চাকমা, মা- মেরী চাকমা, বাবা- সুশান্ত চাকমা, ত্রিজীবন- জিটন চাকমা।
আলো, মঞ্চ ও সংগীত পরিকল্পনা- আশিক সুমন, কস্টিউম ও কোরিওগ্রাফি- এলি চাকমা, মনিষা চাকমা, রিয়া চাকমা। প্রপস্ নির্মাণ করেছেন- নিকেল চাকমা, সুশান্ত চাকমা, জিটন চাকমা । আবহ সংগীত সঞ্চালন- আব্দুল্লাহ আল মামুন, জ্যাকসন চাকমা, বেকী চাকমা। প্রচার- জ্যাকসন চাকমা।
Print Friendly

Related Posts