প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে ডিমের জুড়ি নেই

ডিমকে বলা হয় গরীবের আমিষ। কেউ বলেন, ‘আমিষঘর’। গোলাকৃতি এই খাদ্যপণ্যের ভেতরের পুরোটাই আমিষ। সস্তায় প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে ডিমের জুড়ি নেই। বিশ্ব ডিম দিবস আজ।

দিবসটি প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার উদযাপিত হয়। ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় আন্তর্জাতিক এগ কমিশনের কনফারেন্সে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলছে প্রতিবছরের এই উদযাপন। এর উদ্দেশ্য- ডিমের খাদ্যমান ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে মানুষকে জানানো এবং স্বাস্থ্যসম্মত ডিম উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ভোক্তার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ডিম রাখতে উৎসাহ দান।

ডিম দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য– ‘প্রতিদিন ডিম খাই, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াই’।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্সেস অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ডিম দিবস পালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) লাইভ স্টক ইকোনমির তথ্য অনুসারে, গেল অর্থবছরে দেশে ডিম উৎপাদিত হয়েছে ২০ কোটি ৫৭ লাখ ৬৪ হাজার বা মাথাপিছু ১২১টি। আগের বছর ছিল ১৭ কোটি ৩৬ লাখ ৪৩ হাজার বা মাথাপিছু ১০৪টি। সে হিসাবে এক বছরে ডিমের উৎপাদন বেড়েছে তিন কোটি ২১ লাখ আর মাথাপিছু বেড়েছে ১৭টি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) পুষ্টিমান অনুসারে, বছরে একজন মানুষকে কমপক্ষে ১০৪টি ডিম খেতে হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. শেখ আজিজুর রহমান বলেন, ‘ডিমের বাজার বড় হলেও অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষের মধ্যেও কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। এর সবগুলোই অমূলক। ডিমের পুষ্টিগুণ নির্ভর করে ডিমের আকার ও ওজনের ওপর। এ ছাড়া হৃদরোগের ধারণাও ঠিক নয়। ডিম নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে আমরা সেমিনার, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’

২০১৩ সালের জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিম খাওয়ার সঙ্গে হৃদরোগের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ডিমের কুসুমের রং যা-ই হোক না কেন, এর সঙ্গে পুষ্টিগুণের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ ডিমের কুসুমের রং নির্ভর করে হাঁস-মুরগির খাদ্যের ভেতরে জ্যান্থোফিল নামক এক ধরনের পিগমেন্ট বা রঞ্জক পদার্থের উপস্থিতির ওপর। পুষ্টিবিদরা বলেন, প্রতিটি ডিমেই ভিটামিন ‘সি’ ছাড়া প্রায় সব ধরনের ভিটামিন রয়েছে। এ ছাড়া ওমেগা-৩ রয়েছে সব ডিমে।

Print Friendly

Related Posts