আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: দুয়ারে কড়া নাড়ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। আর ঢোল-তবলা ছাড়া দুর্গাপূজা কেমন যেন বেমানানই মনে হয়। তাই দুর্গোৎসবের ঢোল বাজনা অপরিহার্য অংশ। টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বাদ্যকরপাড়ার ঢাকীরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে।
পূজার বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন তারা। উপজেলার বাসাইল নাটিয়াপাড়া সড়কের বাদ্যকরপাড়ার পাশ দিয়ে যেতেই ভেসে আসে ঢাক-ঢোলের ডুম-ডাম, টুন-টান শব্দ। দুর্গাপূজাকে সামনে রেখেই তাদের এ ব্যস্ততা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতায় দেবী দুর্গার আগমনীতে ঢাক-ঢোল না বাজলে এর পূর্ণতা কোথায়? আর সে পূর্ণতা আনতে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ডাক পড়েছে বাসাইলের ঢাকীদের।
সরোজমিনে বাদ্যকরপাড়া যেতেই দেখা গেল, সব লোকজন ঢাক-ঢোল নিয়েই ব্যস্ত। কেউ পুরনোগুলো মেরামতে, কেউ বা আবার নতুন ঢাক-ঢোল তৈরিতে। সবাই সেরে নিচ্ছেন তাদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
পূজায় ঢাক বাজাতে তারা যাবেন জেলার বিভিন্ন স্থানে। তাই পুরো বাদ্যকরপাড়াজুড়েই যেন ব্যস্ততা।
বাদ্যকরপাড়ার ঢুলি পরিমল ঋষি জানান, নানা কারণে ঢুলিদের (ঢোল বাদক) সংখ্যা কমে গেছে। তবে এখনো ওই পাড়ার ৩০-৪০টি পরিবার এ পেশার সঙ্গে জড়িত। বাসাইলের সবগুলো পূজামণ্ডপ ছাড়াও জেলা এবং জেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকার দুর্গাপূজায় এ পাড়ার বাদকদের ডাক পড়ে। ফলে পূজার এ সময়টাতে তাদের ব্যস্ততা একটু বেড়েই যায়।
মনির ঋষি দাস নামে আরেক ঢুলি জানান, পুরনো সব বাদ্যযন্ত্রগুলো মেরামতের পাশাপাশি এ সময় নতুন নতুন ঢোল তৈরি করতে হয়। সেগুলো আবার বাজিয়ে চর্চা করে নিতে হয়।
দুর্গাপূজার সময়টাতে তাদের কদর একটু বেশি। এ সময় জায়গা বিশেষে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বায়নায় বিভিন্ন এলাকায় ডাক পাওয়া যায়।
বাসাইল উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল রায় স্বপন বলেন, আগের তুলনায় ঢুলির সংখ্যা এখন অনেক কমে গেছে। তাই তাদেরকে অগ্রিম টাকা দিয়ে চুক্তি করতে হয়।
পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি গৌরঙ্গ মোহন জানান, এ বছর বাসাইল উপজেলায় ৬০ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ১১ অক্টোবর সোমবার ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।