আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের বাসাইলে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। এ সারের উপকারিতা দেখে দিনদিন কৃষকরা নিজ খরচেই এ সার তৈরি করছে।
কম দাম, অধিক কার্যকারিতা, পরিবেশ বান্ধব ও সাশ্রয়ী হওয়ায় এই সার ব্যবহারে অনেক কৃষক আগ্রহী হচ্ছেন। হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, গবাদি পশুর গোবর, শাকসবজির উচ্ছিষ্ট, খোসা ও কচুরিপানার মিশ্রণে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদন করা হয় কেঁচো সার। যা ভার্মি কম্পোস্ট সার নামে অধিক পরিচিত। পচনশীল দ্রব্য দিয়ে তৈরি ভার্মি সার ব্যবহারে জমির গুণগত মান ঠিক থাকে।
বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে কাশিল ইউনিয়নের দাপনজর গ্রামে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অ লের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনের উপর মাঠদিবস অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শাহানাজ পারভিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় উপ-সহকারি কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম। এসময় ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি ও উপকারিতা উপর আলোচনা করা হয়।
উপজেলার দাপনাজর গ্রামের ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন কারি কৃষক হোসেন আলী জানান, একটি রিং এ ৫০ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করা যায়। সার তৈরিতে প্রয়োজন হয় কেঁচো, পঁচা গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, তরকারির খোসা ও কচুরিপানা। তবে সব উপকরণ না পেলেও কেঁচো, কলার খোল ও পঁচা গোবর দিয়ে এই সার তৈরি করা যায়। আমি কৃষি অফিস থেকে ১০ টা রিং আর কেঁচো পাইছিলাম। সেখান থেকে শুরু কিন্তু এখন আমার কাছে ২৫ টা রিং রয়েছে। এ সারের যে উপকার তাতে আমি আরো রিং বাড়াবো।
উপজেলার নর্থখোলা গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, এই সার খুব উপকারি। আমি নিজে ব্যবহার করি। বাকি সার আশে পাশে কৃষকের কাছে বিক্রি করি। প্রথমে আমি কৃষি অফিস থেকে ১০টি রিং আর কেঁচো পাইছিলাম। এর পর চাহিদা দেখে নিজ খরচে আরো ৮ টি রিং আমি বসিয়েছি।
বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের উপ-সহকারি কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, ৫০ কেজি সার উৎপাদন করতে সময় লাগবে এক-দেড় মাস। ৫০ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট সার ৩০ শতক জমিতে ব্যবহার করা যায়। ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরিতে তেমন খরচ না হওয়ায় কৃষকরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
বাসাইল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নাজনিন আক্তার জানান, আমরা উপজেলা থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের বিনামূল্যে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির উপকরণ দিয়েছি। এ সারের উপকারিতা দেখে দিনদিন কৃষকরা নিজ খরচেই এ সার তৈরি করছে।