টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: গারোদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব ওয়ানগালা উৎসব নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে।
রোববার (২১ নভেম্বর) টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়াঞ্চলের বসবাসরত খ্রিষ্ট রাজার মহাপর্ব দিনে পীরগাছা সেন্ট পৌলস্ মিশনের আয়োজনে সেন্ট পৌলস উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এবং জলছত্র মিশণের আয়োজনে ঘায়রা মিশনারী স্কুল মাঠে দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত হয়।
আদিকাল থেকেই গারোদের বিশ্বাস, মানুষের জীবন ও জীবিকার জন্য তার প্রাকৃতিক যা কিছু সম্পদ সবই দেবতার সৃষ্টি এবং দান। দেবতা তাতারা পৃথিবী, সালজং পার্থিব ফসলাদি এবং সুষিমি রোগ নিরাময়কারী ও ঐশ্বর্য প্রদানকারী। তাই এসব দেবতাদের দানকৃত সম্পদ বা ফসলাদি ব্যবহার করার আগে প্রকৃতি ঘনিষ্ঠ গারোরা তাদের উৎপাদিত ফসলাদি সুষিমি, সালজংসহ ওইসব দেবতাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে। দেবতাদের উৎসর্গ করা ছাড়া গারোরা তাদের ফসল ব্যবহার করে না। ফসল উৎসর্গের এই আনুষ্ঠানিকতাই গারো ভাষায় ওয়ানগালা।
ক্যাথলিকদের ময়মনসিংহ ধর্ম প্রদেশে খ্রিষ্ট রাজার মহাপর্ব উপলক্ষ্যে মধুপুরের দুটি পৃথক স্থানে অভিন্ন জাঁকজমকপূর্ণ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। পীরগাছা মিশন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন আর্চ বিশপ সুব্রত লরেন্স হাওলাদার। পীরগাছা ধর্মপল্লী পাল পুরোহিত ফা. লরেন্স সিএসসি সভাপতিত্ব করেন।
বক্তৃতা পর্বে অংশ নেন ফাদার শংকর, আশিষ, সিস্টার সুষমা, মধুপুর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, গারো নেতা মার্টিন মৃ, সেন্টপৌলস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ মৃ, লিটুশ চিরাণ প্রমুখ।
খ্রীষ্টযোগ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনব্যাপী এই ওয়ানগালা অনুষ্ঠান শুরু হয়। মন্ত্র,সংগীত আর নৃত্যে উঠে আসে গারো সংস্কৃতি। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে গারোদের জীবন ঘনিষ্ঠ সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়। রুগালা, গোরীরুয়া, গ্রিক্কা, বিসাদিমদিমা, চাম্বিল মেসা, নকগাখা, চাওয়ারী সিকগা ইত্যাদি শিরোনামের অনুষ্ঠিত পার্বিক বিষয়গুলো গারো সংস্কৃতিকে পরিচিত করে তুলে। মধুপুর বনাঞ্চলের গারোদের সর্ববৃহৎ সামাজিক অনুষ্ঠান এই ওয়ানগালার আয়োজনে দেশি-বিদেশি অতিথি ছাড়াও ধর্ম বর্ণ নির্বশেষে হাজার হাজার লোক সমাগম হয়।
আরিফুল/টাঙ্গাইল