শিক্ষক কর্মচারীদের ৫০ ভাগ মহার্ঘ্য ভাতা প্রদানের দাবিতে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন

খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল: দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে বেসরকারি স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের ৫০ ভাগ মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান ও শিক্ষা জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন সমিতি।

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় নগরের ফজলুল হক রোডস্থ বাকশিস কার্যালয়ে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী সমিতি ফেডারেশন এর বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে সরকার এসেছে, সরকার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। শিক্ষা আজ ধনীদের শিক্ষায় পরিনত হয়েছে। শিক্ষা গরিবদের ধরাছোয়ার বাইরে চলেগেছে। অথচ সংবিধান মোতাবেক শিক্ষা সকল মানুষের মৌলিক অধিকার।

তিনি বলেন, মহামারি করোনায় শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষকরা মারাক্তকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দূভাগ্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী বহু প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তিবর্গকে প্রনোদনা দিয়েছেন কিন্তু বেসরকারী স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীরা বঞ্চিত থেকেছে।

তিনি আরো বলেন , বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের বাজারে উর্দ্ধগতি ও চিকিৎসা সেবা নেওয়া শিক্ষকদের জন্য দুরুহ হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় দাড়িয়ে বেসরকারি স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের ৫০ ভাগ মহার্ঘ্য ভাতা প্রদানের জোর দাবি জানাই।

বেসরকারি স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় কোন বদলির ব্যবস্থা নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন শিক্ষক নিয়োগ হয় এনটিআরসি থেকে। যার ফলে একজন শিক্ষক নিয়োগের পর থেকেই তাকে একই কর্মস্থানে থাকতে হয়। তিনি বলেন, বেসরকারি স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীরা মাসে এক হাজার টাকা বাড়িভাড়া পায়, উৎসব বোনাস দেওয়া হয় মাত্র ২৫ ভাগ। তাই আমাদের দাবি সরকারি স্কুল কলেজ, মাদ্রাসার ন্যায় আমাদেরকেও ভাতা প্রদান করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় চরম বৈষম্য বিরাজমান, তার উপর অনার্সসহ প্রচুর শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ১০/২০ বছর শিক্ষকতা করে কোন বেতন পাচ্ছেনা। এতে ওইসব শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এসময় তিনি বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো. বেসরকারি স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের ৫০ ভাগ মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান, বাড়িভাড়া এক হাজার টাকার পরিবর্তে সরকারি স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ন্যায় প্রদান করা, বেসরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজে জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের পরিবর্তে সহকারি অধ্যাপক পদবী চালু, বেসরকারি কলেজে অনার্স শিক্ষক সহ নন এমপিও ভুক্ত সকল শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিও ভুক্ত করা, শিক্ষা মন্ত্রনালয় , জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা বোর্ড, মাউশিসহ সকল শিক্ষা অফিসগুলোতে শিক্ষক কর্মচারীদের নানা হয়রানী বন্ধ, যানবাহনে ছাত্র শিক্ষক ও কর্মচারীদের যাতায়াতে হাফভাড়া প্রদান ও পুর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদানসহ শিক্ষা জাতীয় করনের দাবি তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি আরো জানান, উল্লেখিত দাবির পেক্ষিতে আগামী ১১ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১০টায় নগরের অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এর আঞ্চলিক কমিটির সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম, শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান গ্রুপ) এর আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ প্রনব বেপারী, বাকশিস আঞ্চলিক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খসরু, শিক্ষক নেতা মজিবর রহমান, অধ্যক্ষ তাইজুল ইসলাম প্রমুখ।

Print Friendly

Related Posts