নবজাতকের জন্মগত হাইপোথাইরয়েড শনাক্তকরণ (দ্বিতীয় পর্যায়) এর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

“নবজাতকের মধ্যে জন্মগত হাইপোথাইরয়েড রোগের প্রাদুর্ভাব শনাক্তকরণ (দ্বিতীয় পর্যায়)” উন্নয়ন প্রকল্প কর্তৃক বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস (ইনমাস), ঢাকা -এর অডিটোরিয়ামে “Dried Blood Spot (DBS) পদ্ধতিতে নবজাতকের রক্তের নমুনা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও জন্মগত থাইরয়েড হরমোনের অভাবজনিত রোগ নির্ণয়” শীর্ষক একটি একদিন ব্যাপি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস (ইনমাস), ঢাকা এর পরিচালক প্রফেসর ডা. জেসমিন আরা হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন (বাপশক) এর সন্মানিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সানোয়ার হোসেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন (বাপশক) এর সদস্য (জীববিজ্ঞান) প্রফেসর ডা. অশোক কুমার পাল। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মাদ আনোয়ার-উল-আজিম।

বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হসপিটাল, স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড মেডিক্যাল কলেজ হসপিটালসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থেকে আগত প্রায় ১১০ জন নার্স/মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন।

প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে উল্লেখ করা হয় যে, নবজাতকের জন্মগত থাইরয়েড হরমোনের অভাবজনিত রোগ অথবা জন্মগত হাইপোথাইরয়েডিজম (Congenital Hypothyroidism)” নবজাতক শিশুদের একটি সঙ্কটজনক অবস্থা, যা জন্মের প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শনাক্ত করে চিকিৎসা করা না হলে শিশুটি স্থায়ীভাবে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীতে পরিণত হয়। শিশুর জন্মের ৪ সপ্তাহের মধ্যে জন্মগত হাইপোথাইরয়েডিজম নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করা গেলে তাকে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধিতার অভিশাপ থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

দিনব্যাপি প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে নবজাতকের Dried Blood Spot (DBS) পদ্ধতিতে রক্তের নমুনা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও জন্মগত থাইরয়েড হরমোনের অভাবজনিত রোগ নির্ণয় পদ্ধতি সম্পর্কে আগত প্রশিক্ষণার্থী দের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই পদ্ধতিতে জন্মের সাথে সাথে শিশুর নাড়ী অথবা জন্মের ২ থেকে ৫ দিনের মধ্যে শিশুর পায়ের গোড়ালি থেকে কয়েক ফোটা রক্ত নিয়ে তা বিশেষ পদ্ধতিতে ফিল্টার পেপারে সংরক্ষণ করা হয় এবং পরবর্তীতে ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করে জানা যায় তার জন্মগত হাইপোথাইরয়েড রোগ আছে কি না ?

(বাপশক) এর সদস্য (জীববিজ্ঞান) প্রফেসর ডা. অশোক কুমার পাল প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অবহিত করেন যে, চলমান প্রকল্পের মাধ্যমে নবজাতকের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জন্মগত হাইপোথাইরয়েডিজম (Congenital Hypothyroidism) শনাক্তকরনের লক্ষ্যে সমগ্র দেশব্যাপী Dried Blood Spot (DBS) পদ্ধতিতে নবজাতক শিশুর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে । জন্মগত হাইপোথাইরয়েডিজম শনাক্তকরণের বিশেষায়িত গবেষণাগার নির্মাণ ছাড়াও এই প্রকল্পের মাধ্যমে নবজাতক শিশুর জন্মগত হাইপোথাইরয়েডিজম শনাক্তকরণ বিষয়ে জন সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জন্মগত রোগ শনাক্তকরণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স, হেলথ টেকনোলজিস্ট, প্যারাম্যাডিকস, স্বাস্থ্যকর্মী এবং এনজিও কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে জন্মগত হাইপোথাইরয়েডিজমের প্রাদুর্ভাব বিষয়ে অধিক পরিমান তাৎপর্যপূর্ণ উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে, যা পরবর্তীতে জন্মগত হাইপোথাইরয়েডিজম শনাক্তকরণ বিষয়ে জাতীয় নীতি প্রণয়ন করতে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী মহল ও নীতি নির্ধারকদের জন্য সহায়ক হবে।

Print Friendly

Related Posts