জ.ই বু্লবুল: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শিবপুরে ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে তৈরি করা প্রাথমিক তালিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অভিযোগ-তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থী হয়েও তালিকায় দলীয়-যোগ্য-সৎ প্রার্থীর নাম না রেখে অজনপ্রিয়দের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে কনিকাড়াসহ শিবপুর ইউনিয়নবাসী ক্ষুব্ধ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানা ধরনের সমালোচনা।
জানা গেছে, সম্প্রতি ষষ্ঠ ধাপে নবীনগরের ৭ ইউনিয়নের নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করা হয়। এরপর মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দেন। কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করে। ওই তালিকায় শিবপুর ইউনিয়নের সুপরিচিত, সমাজসেবী, সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা মো. সোহরাওয়ার্দ্দিন চৌধুরীর নাম উঠেনি।
সোহরাওয়ার্দ্দিন চৌধুরীর পরিবার স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে অনবদ্য ভূমিকা রেখে আসছে। প্রার্থী সোহরাওয়ার্দ্দিন ইউনিয়ন ছাত্রলীগ থেকে রাজনীতি শুরুর পর গত ৩০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তার নিজের গ্রাম কনিকাড়াসহ শিবপুর ইউনিয়নে রাজনীতির পাশাপাশি সমাজ সেবায় অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। ৯০’র দশক থেকে শুরু করে অদ্যাবধি স্থানীয় নির্বাচন-জাতীয় নির্বাচন, সব ধরণের নির্বাচনেই দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সোহরাওয়ার্দ্দিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের কৃতি কর্মী হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। সোহরাওয়ার্দ্দিন চৌধুরীর পরিবার কনিকাড়া কিংবা শিবপুর নয়, পুরো নবীনগর উপজেলার আদর্শ ও অনুকরণীয় ঐতিহ্যবাহী পরিবার। সারা দেশে চলমান ইউপি নির্বাচন শুরুর পর থেকে কনিকাড়া গ্রাম তথা শিবপুর ইউনিয়নের সচেতনসমাজের অনুরোধে সোহরাওয়ার্দ্দিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে আসছিলেন। শিবপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ভোটার কনিকাড়া গ্রামে। কনিকাড়া গ্রামের ভোটারদের উৎসাহ উদ্দীপনায় শামিল হয় আশপাশের গ্রামগুলোও।
অতি সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের করা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় অদৃশ্য কারণে সোহরাওয়ার্দ্দিন চৌধুরীর নাম না থাকায় শিবপুর ইউনিয়নজুড়ে উঠেছে ক্ষোভের ঝড়।
ইউনিয়নের ভোটারদের দাবি- যাদেরকে চূড়ান্ত তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে তাদের পরাজয় নিশ্চিত। তাদের নেই কোনো ভোট ব্যাংক, স্থানীয়ভাবে তাদের তেমন কোনো অবদানও নেই। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী কোনো নেতা হয়তো শিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আসছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সাদেকুর রহমান বলেন- যত প্রার্থীর নাম তালিকায় দেয়া হয়েছে- তাদের সবার চাইতে শিক্ষায়, গ্রহণযোগ্যতায় এবং ভোট ব্যাংকের বিবেচনায় সোহরাওয়ার্দ্দিন চৌধুরী অনেক এগিয়ে। এমনকি রাজনৈতিক ত্যাগ ও অভিজ্ঞতা উনার ধারে কাছেও নেই। তার নাম প্রার্থী তালিকা না থাকায় এই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র (বিএনপি) প্রার্থীর পাশ নিশ্চিত বলে তিনি দাবি করেন।
ভোটার মোশারফ বলেন, সোহরাওয়ার্দ্দিন চৌধুরীর নাম তালিকায় না দিয়ে ৬ হাজার ভোটারের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা, যা দলের জন্য ক্ষতিকর। তিনি মনোনয়ন পেলে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত ছিল বলে তিনি দাবি করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়- ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে গত ১৮.১২.২০২১ইং তারিখ মো. সোহরাওয়ার্দ্দিন চৌধুরীর সমর্থনে কনিকাড়া গ্রামে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসভায় কনিকাড়াবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলমত নির্বিশেষে তার পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।