একজন প্রথিতযশা ফটোগ্রাফার মঞ্জুর আলম বেগ স্যার

মঞ্জুর আলম বেগ স্যার  ও খন্দকার মাসুদ উজ জামান

খন্দকার মাসুদ উজ জামান 

ইউটিউব নিয়ে কাজ করছি দীর্ঘ দিন ধরেই। কিন্তু পূর্বের কিছু কথা না বললেই নয় । মূলত  ইউটিউবার  হতে  হলে  ক্যামেরার  উপরে  প্রশিক্ষন  থাকা  প্রয়োজন  যেহেতু  ফটোগ্রাফি  একটি  শিল্প ও আলো- ছায়ার খেলা ।

যারা ইন্সটিটিউট থেকে প্রশিক্ষন নেওয়া যেমন: আমি বেগআর্ট ইন্সটিটিউট থেকে ফটোগ্রাফিতে ব্যাসিক ও  ডিপ্লোমা করেছি, যার  প্রতিষ্ঠাতা  ছিলেন  ফটোগ্রাফির  স্রষ্টা  ও  বিশ্বের  এগারো  জনের একজন অন্যতম মঞ্জুর আলম বেগ  স্যার,  আর  একজন  প্রয়াত  গোলাম  মোস্তফা  ।দুজনেই  একুশে  পদক  প্রাপ্ত ।

ঐ সময় আমরা যারা জুনিয়র ছিলাম ইন্সটিটিউট থেকে আমরা দেখতাম প্রয়াত গোলাম কাসেম ডেডী।উল্লেখ্য, এই নামটি মঞ্জুর আলম বেগ স্যার রেখেছিলেন। যিনি ক্যামেরা রিক্রেশন ক্লাব এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন । প্রয়াত আর এক জন আলোকচিত্র শিল্পী, যিনি বিশ্বের অন্যতম আনোয়ার হোসেন।

রশিদ তালুকদার,খসরুজ্জামান বাবু, স্বপন সাহা, পাভেল রহমান ও জুনিয়রদের মধ্যে আমি খন্দকার মাসুদ উজ জামান, খন্দকার আসাদ উজ  জামান  সুমনসহ  প্রায়  লাখ লাখ  আলোকচিত্র  শিল্পী  তাঁর  হাতে গড়া। তখন ছিল ফ্লিম এর   যুগ ।  তখন   ফটো   পেপারে,  ডিজিটাল  ক্যামেরার  আবির্ভাব  হয়নি ।

তখন যারা আমরা প্রশিক্ষন নিয়ে ছিলাম, সেটি এখন  কাজে  লাগছে ।  তখন  ছিল   এনালক  এখন  হয়েছে  ডিজিটাল পার্থক্যটা  ফ্লিম ডেভোলপ করতে হতো । ডেভোলপ  করে  ডার্ক রুমে ফটো পেপারে  ছবি প্রিন্ট করতে হতো।ঐ সময় অনেক নামি-দামি ক্যামেরা ছিল রলিফ্লাক্স, পেনটেক্স-কে থাউজেন্ড,  পেনটেক্স এম ই সুপার,  নিক্কন,  জেনিথ, ইয়াছিকা,  মিলনটা,  নাইকন,  কনিকা,  ফুজি,  কোডাক,  ওয়ান  টুয়েনটির  ভিতরে  ছিল  বাক্স  ক্যামেরা,  সিগাল,  ইয়াছিকাসহ  বিভিন্ন  ধরনের  ক্যামেরা  ও  ফ্লিম, কালার ফ্লিম ছিল-ফুজি, কোডাক, কনিকা, ১০০ হতে ৪০০ স্পিড পর্যন্ত সাদা কালো এবং কালার ফ্লিম ছিল।ওয়ান টুয়েন্টি আগফা, ছিগাল, কোডাক সহ রিফিল পাওয়া যেত,  ঐ সময়  মঞ্জুর  আলম  বেগ  স্যার  আমাদের  বলতেন,  লাখ লাখ  টাকা  দামের  ক্যামেরা  আমি  বিভিন্ন  দেশ  থেকে  পুরষ্কার  হিসেবে  পেয়েছি  যেহেতু  আমেরিকা,  রাশিয়া,  জাপানসহ  বিশ্বের  বিভিন্ন  দেশ  থেকে  আমি  প্রথম  পুরষ্কার  এনেছি । কিন্তু আমি যে সব পুরষ্কার এনেছি সে ক্যামেরাগুলি বেশি দামি নয়, সে ক্যামেরার ছবি যেমন:  জেনিথ  ক্যামেরা  যার  দাম  ছিল  দেড়  হাজার  থেকে  সর্বোচ্চ  দুই  হাজার  টাকা। উনি বলতেন শুধু কাজটা জানা দরকার ও বুঝা দরকার।

তাই আমি এখন একজন ইউটিউবার হিসাবে বলতে চাই আলোকচিত্রের একই বিষয়, এটিকেই আমরা যথাযথ কাজে লাগিয়ে আধুনিকতার ছোয়ায় ডিজিটালে প্রবেশ করেছি। কিন্তু কাজের ধরন একই যা আমরা এনালকে করেছি। বরং তখন কাজের ধরন কঠিন ছিল যেহেতু ফ্লিম ডেভোলপ ও প্রিন্ট করতে হতো ডার্ক রুমে। ক্যামেরার স্প্রিট ও এপারচার  বা  আছা  ঠিক রেখে কাজ করতে হতো।তারপরে একটি ভালো ছবি পাওয়া যেতো।এখন প্রযু্ক্তি অনেক সহজ করেছে এসব।তাই আমি একজন ইউটিউবার হিসাবে বলবো যারা লাখ লাখ  টাকার  ক্যামেরা  চালান  তাদের  রেজুলেশন  ভালো  অবশ্যই  স্বীকার  করতে  হবে।

অথচ আমি আমার যে ফটোগ্রাফি শিক্ষা গুরু প্রয়াত মঞ্জুর আলম বেগ স্যার যা শিখিয়েছিলেন সেই শিক্ষা দিয়ে কাজ করছি অত্যন্ত কম দামের ক্যামেরায়।দরকার শুধু  কিছু  কৌশল,  কম্পেজিশণ ও নিজের কিছু কর্মদক্ষতা কাজে লাগিয়ে চলা।এটা বলা এজন্যই যে, একজন ইউটিউবার হতে হলে প্রচুর কাজ করতে হবে।বেশী দামি ক্যামেরা না থাকলেও অসুবিধা নেই, কম মূল্যের ক্যামেরা দিয়েও ভালো কাজ করা সম্ভব।দরকার শুধু অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা। উল্লেখ্য যে আমি বেগ স্যারের নির্দেশে বি পি এস এর সদস্য হই ও অনেককেই সদস্য বানিয়েছি। তখন থেকেই মঞ্জুর আলম বেগ স্যারের নির্দেশেই আমি  বাংলাদেশ  আলোকচিত্র  শিল্পী  এসোসিয়েশন  ও  বাংলাদেশ  ক্যামেরা  ক্লাব  এর  প্রতিষ্ঠাতা  পরিচালক  হিসেবে  কাজ করে যাচ্ছি বিগত ৩৫ বছর যাবৎ। নানা ঘাত ও প্রতিঘাত মোকাবেলা করেই চলেছি কিন্তু হতাশ হইনি।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক

Email: taranewsbd@gmail.com , kmzaman.bd@gmail.com, ssjrtv312@gmail.com

 

Print Friendly

Related Posts