চলতি বর্ষা মৌসুমে দিনাজপুরে ডোবা-নালা, খাল-বিল কিংবা আমন ধানের ক্ষেতে জমেনি বৃষ্টির পানি। পানি না থাকায় জন্মেনি দেশি প্রজাতির পুঁটি, টেংরা, কই, মাগুর, শোল ও ছোট মলা-ঢেলা মাছ। এসব স্থানে পানি সেচেও মাছ না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন স্থানীয়রা।
রোববার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে হিলি-ঘোড়াঘাট সড়কের দুই পাশের ডোবা-নালায় গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। দেখা যায়, স্থানীয়রা দেশি প্রজাতির মাছ পাবার আশায় ডোবায় জমে থাকা অল্প পানি সেচে ফেলছেন। সেচের পর দেখা মিলছে না মাছের। শুধু কিছু পুঁটি আর ডারকানি মাছ অল্প পানিতে লাফালাফি করছে। তবে দেখা যাচ্ছে না টেংরা, কই, মাগুর কিংবা শোল মাছের।
প্রতি বছর বর্ষা শেষে এসব ডোবা-নালা এবং আমন ক্ষেতে পর্যাপ্ত থাকে এসব দেশি প্রজাতির মাছ। এবার বর্ষার তেমন প্রভাব পড়েনি এই অঞ্চলে। যার কারণে আমন চাষেও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন কৃষক। প্রতিবছর এমন সময় ধানের ক্ষেতসহ ডোবা-নালা, খাল-বিলে জমে থাকতো বর্ষার পানি। বর্তমানে এসব জমিতে পানি নেই। যেসব ডোবা-নালার পাশে ধানের জমি আছে, ঐসব ডোবা-নালার পানি শ্যালো মেশিন দ্বারা সেচ দিচ্ছেন আমন চাষিরা। একদিকে ক্ষেতে পানিও দিচ্ছেন তারা, অপরদিকে বর্ষার শেষ মুহূর্তের দেশি প্রজাতির মাছও ধরা হচ্ছে।
মাছ ধরতে আসা রাসেল মিয়া বলেন, বর্ষা শেষ, প্রতিবছর এই ডোবায় আমরা পানি সেচে মাছ ধরি। কিন্তু এবার তেমন কোন মাছ নেই। শুধু কিছু পুঁটি আর ডারকানি মাছ চোখে পড়ছে।
একজন ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠির মিতালী সেরেন বলেন, এবার এ্যাটে কুনায় কোনই মাছ পাওয়া যাউছে না। হামরা এসময় অনেক মাছ পাউ, বর্ষার পানি বেশি জমেনি, কুত্তে মাছ আসবে?
কিশোর কাওছার বলেন, আমি ছোট বেলায় থেকে মাছ ধরি, এটা আমার নেশা। এবার বর্ষার শুরু থেকে এযাবৎ তেমন কোনো মাছ পাইনি। খাল-বিলে বর্ষার পানি নেই, পানি না থাকলে মাছ আসবে কোথা থেকে।
শ্যালো মেশিনয়ালা রফিকুজ্জামান বলেন, আমন ক্ষেতে প্রতিটি গাছের মুখে ধান আসছে। ক্ষেতে একটু পানি থাকলে ধানের অনেক উপকার হতো। তাই জমির পাশে ডোবা-নালা থেকে পানি জমিতে সেচ দিচ্ছি। আবার ডোবায় মাছও পাওয়া যাচ্ছে। তবে আশা করেছিলাম ডোবায় টেংরা কই মাগুর শোল মাছ পাবো, কিন্তু শুধু কিছু পুঁটি আর ডারকানি মাছ লাফালাফি করছে।