শেষে এসে জ্বলে উঠলো বাংলাদেশ। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে শেষটা রাঙালো লাল-সবুজের দল।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিক বোলারদের সামনে ৪৫.২ ওভারে মাত্র ১২৬ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ বল আগেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে নেওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে সফরকারীরা।
এদিকে আফগানিস্তানের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশের ভরাডুবি থাকলেও সাকিব যেন ছিলেন নিজের ছন্দেই। আর তাই তো সবশেষ ম্যাচেই বিশ্বের নবম বোলার হিসেবে ঘরের মাঠে ৪০০ আন্তর্জাতিক উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন বাংলাদেশের পোস্টারবয়।
একই সঙ্গে এই কীর্তি গড়ার দিক থেকে তিনি পঞ্চম স্পিনার এবং প্রথম বাঁ-হাতি বোলার। এছাড়া ‘৪০০’ উইকেট নেওয়া ৯ বোলারের মধ্যে সেরা স্ট্রাইকরেটও সাকিবেরই। এমনকি প্রতি ৪২.৬ বলের পর একটা করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব। এর পরের ম্যাচেই ফের বল হাতে গড়লেন ভিন্ন আরেকটি রেকর্ড, সঙ্গে এদিন ব্যাট হাতেও পৌঁছে গেলেন ১৪ হাজার রানের ক্লাবে।
মঙ্গলবার আফগানিস্তান সিরিজের শেষ ম্যাচে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে ফেরানোর মধ্য দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে বল হাতে ৩০৫ নম্বর উইকেট তুলে নেন সাকিব। আর এর মাধ্যমেই বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে উইকেট শিকারির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসেন সাকিব। যেখানে যৌথভাবে নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ড্যানিয়েল ভেট্টোরির সঙ্গে অবস্থান করছেন তিনি। তবে ভেট্টোরি থেকে ৬০ ম্যাচ কম খেলেই এই রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। এছাড়া বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে ওয়ানডে ইতিহাসে সাকিবের চেয়ে বেশি উইকেট আছে আর কেবল সনাৎ জয়সুরিয়ার। আর ১৮ উইকেট সংগ্রহ করলেই সাকিব স্পর্শ করবেন তাকে।
এদিকে, এদিন সাকিব বল হাতে ছিলেন দলের সবচেয়ে কিপটে বোলারের ভূমিকায়। ১০ ওভারে তিনি খরচ করেছেন মাত্র ১৩ রান, এর মধ্যে তুলে নিয়েছেন ১ উইকেট। তবে পুরো ১০ ওভার বল করে এর আগেও একবার ১৩ রান দিয়েছিলেন সাকিব। সেটা ২০০৬ সালে, আর সেটাও চট্টগ্রামেই। সেবার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ রান খরচায় ১ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এর থেকে কম খরুচে বোলিংও তিনি আরেক ম্যাচে করেছিলেন, আর সেটা ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেই ম্যাচ মিরপুরে ১০ ওভারে দিয়েছিলেন ১১ রান, তবে উইকেট নিয়েছিলেন ৩টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৪৫.২ ওভারে ১২৬ (ওমরজাই ৫৬, হাশমতউল্লাহ ২২, মুজিব ১১, গুরবাজ ৬; শরীফুল ৪/২১, তাসকিন ২/২৩, তাইজুল ২/৩৩, সাকিব ১/১৩, মিরাজ ১/৩৫)।
বাংলাদেশ: ২৩.৩ ওভারে ১২৯/৩ (লিটন ৫৩*, সাকিব ৩৯, হৃদয় ২২*, শান্ত ১১, নাঈম ০; ফজলহক ২/২৬, নবি ১/৭)।
ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ আফগানিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: শরীফুল ইসলাম।
সিরিজসেরা: ফজলহক ফারুকী।