আবু নাঈম : পঞ্চগড়ে স্বামীর বাড়িতে এসে স্বামীকে না পেয়ে বুকভরা বেদনা নিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন ভারতীয় তরুণী রিয়া বালা। কিন্তু ফিরে যাওয়ার চারদিনের মাথায় সেই স্বামীর টানে আবার বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন এ তরুণী। এবার তাকে বরণ করে নিয়েছে স্বামীর পরিবারের লোকজন।
পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশের তেঁতুলিয়ায় প্রবেশ করেন রিয়া বালা। সেখানে ইমিগ্রেশন কাজ শেষ করে অপেক্ষা করছিলেন স্বামীর পরিবারের লোকজন আসার।
ভারতীয় এ তরুণী আসার খবরে ইমিগ্রেশনে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) ফজলে রাব্বি ও মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী। উপস্থিত হন এ তরুণীর শ্বশুর শ্রী নিখিল চন্দ্র রায়। পরে প্রশাসনের উপস্থিতিতে স্বামীর গৃহে ফিরে যান রিয়া বালা।
এর আগে, গত ২৯ নভেম্বর স্বামীকে খুঁজতে বাংলাদেশে ছুটে আসেন রিয়া বালা। কিন্তু তার আসার খবর পেয়ে গা ঢাকা দেয় স্বামী বিটু রায়। স্বামীর গৃহে তিনদিন থাকার পর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা প্রশাসনকে জানালে ১ ডিসেম্বর তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় নারী-শিশু সেলে রাখা হয়। পরের দিন ২ ডিসেম্বর থানায় তার শ্বশুর আসলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে রিয়া বালাকে তার দেশে (ভারত) পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমু’র মাধ্যমে রিয়া বালার সম্পর্ক হয় বাংলাদেশি তরুণ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার দেবনগর ইউনিয়নের শিবচন্ডী এলাকার অখিল চন্দ্র রায়ের ছেলে ২৪ বছর বয়সী বিটু রায়ের সঙ্গে। তাদের সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার শিকারপুর এলাকায় পিসির বাড়িতে রিয়া বালাকে বিয়ে করেন বিটু রায়। বিয়ের পর এক মাস ভাড়া বাড়িতে থাকেন তারা। তারপর বিটু দেশে ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এমনকি বিয়ের বিষয়টিও অস্বীকার করেন। স্বামী বিটু রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় পাসপোর্ট-ভিসা করে গত ২৯ নভেম্বর ফুলবাড়ি-বাংলাবান্ধা ইমিপ্রেশন হয়ে বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগরের শিবচন্ডীতে স্বামীর বাড়িতে চলে আসেন।
এদিকে, তার আসার খবর পেয়েই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান স্বামী বিটু রায়। তিনদিন শ্বশুর বাড়িতে থাকার পর স্বামীকে না পেয়ে নিরাপত্তার শঙ্কায় ভোগেন তিনি। পরে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সোলেমান আলীর মাধ্যমে ঘটনাটি ইউএনওকে জানালে সেখান থেকে উদ্ধার করে থানায় নিরাপত্তা দিয়ে পরের দিন দেশে পাঠিয়ে দেয় প্রশাসন।
রিয়া বালা ভারতের বর্ধমান জেলার অম্বিকা কালনা এলাকার শ্যামল কান্তি বালার মেয়ে।