বঙ্গবন্ধুসমগ্র-দুই ll কামাল বারি

তোমার ফল্গুধারার হৃদয়খানি

 

পিতা হারানোর চোখের জল মিশে আছে
বাংলার হাজার নদীর জলে;
প্রতিটি শোকার্ত প্রাণের বিলাপধ্বনি
এখনো ভেসে আসে কানে;
সতেজ ফুলগুলো সব সেই-যে মৌন হয়ে আছে!
নীল আকাশে গোধূলির লালে মিশে আছে
পিতার পবিত্র রক্তের ধারা!
সেই-যে অগণিত শিশুমনে ছড়িয়ে গেছে
তাজা রক্তের রেখায় বিভীষিকা!
হায়! আজও থামেনি নির্মমতার রক্তের নেশা!
আজও রক্তের নকশায় ভেসে ওঠে
সেই হায়েনার হাসিমুখ!
হেসে ওঠে নপুংসক কুলাঙ্গার!
আজও দুর্বৃত্তের নষ্ট চাহনি চোখ রাঙায়!
হায়! কোথাও কোনোদিন নষ্ট মুখ ভ্রষ্ট পোশাক
চাইনি তো আমরা কেউ!
তবে কেন ভাগাড় পথের ফাটল ফুঁড়ে
ভেলকি দেখায় কিম্ভুত প্রেত!
পিতা, তুমি দিয়েছো স্বাধীন পতাকা
তুমি দিয়েছো স্বাধীন ভূমি
দিয়েছো তোমার ফল্গুধারার হৃদয়খানি
তোমার বীর বাঙালি জেগে আছে, পিতা
জেগে আছে অতন্দ্র প্রেমী।

অশেষ স্বজন তুমি এই বাংলার

 

…বন্ধু, তোমার প্রয়োজন ফুরায় না;
তোমার মৃত্যু দেখিনি কখনও আমি;
তোমার মৃত্যু হয় না;
তোমার মৃত্যু হবে না;
অমর তুমি, বন্ধু।
…বন্ধু, এই যে স্বাধীন স্বদেশ—
এই যে স্বাধীন পতাকা—
এই যে স্বাধীন মানচিত্র—
এই যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ—
তোমার জাগ্রত সত্তার সাথে মিশে আছে;
তোমার মুক্তির গান অমর হ’য়ে আছে স্বদেশ বিদেশ বিশ্বে…
বন্ধু তুমি— পিতা তুমি— অশেষ স্বজন তুমি এই বাংলার।

এ কলম শতমুখ

আমি জীবন্ত বীরগাথা রচনা করতে চাই…
চতুর নপুংসক মুখগুলো এসে পণ্ড করে দেয়
আমার এ অনন্য ঘোর;
প্রকৃত বীরের হৃৎপিণ্ডে বহমান রক্তরসের ঊর্মিমালা
স্রোতের উন্মাদনা আমি লিখতে চাই…
পাপবিদ্ধ পাষণ্ডেরা এগিয়ে আসে কর্কশ রোলে!
মহামতি মুজিবের বীরত্ব-শাণিত আমার কলম
কীটদষ্ট কোনও ফুল কিংবা নির্বীর্যের প্রশংসায়
হবে না মুখর;
সময়ের সবুজ সন্তানের প্রতীক্ষায় জাগরুক
আমার এ কলম শতমুখ।

শেষ রক্তবিন্দু

প্রকৃত সূর্যের আদর্শে
সতেজ আলো ঢেলেছো
সবুজ সোনার বাংলায়।
প্রকৃত প্রেমিকহাতে তুমি
প্রীতির গোলাপ উপহার
উজাড় করে দিয়েছো
প্রিয় স্বদেশমাতা বাংলায়।
সূর্যের আলোয় আলোয়
তুমি চাঁদশোভা সুন্দরতা!
পদ্মা—মেঘনা—যমুনা—
ব্রহ্মপুত্রের উত্তাল ঢেউ
প্রকৃতই তোমার প্রেমিকহৃদয়!
বাঙালির মুক্তির পথে
আজীবন তুমি হৃদয়বান!
শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে…
তুমিই গড়ে গিয়েছো
তোমারই প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ।
Print Friendly

Related Posts