নুরুজ্জামান : সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার কয়রা উপকূলের মানুষের জীবন-জীবিকার চিত্র নিজ চোখে দেখলেন সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া। এ সময় তিনি উপকূলের মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ জীবনের গল্প শুনেছেন ও জীবন জীবিকা কার্যক্রম অবলোকন করেন।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে নির্ধারিত কর্মসূচি শেষে তিনি কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয় মাঠ থেকে হেলিকপ্টারযোগে কয়রা ত্যাগ করেন।
এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এবং খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য তার সফরসঙ্গী ছিলেন।
সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের গিলাবাড়ি এলাকার নয়নী মাঠে নির্মিত হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। সেখান থেকে তিনি উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের নয়ানি যজ্ঞ মন্দিরের মাঠে যান। সেখানে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিংয়ের উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় লোকজনের জীবনমান নিজ চোখে দেখা, লিঙ্গ সমতা, মহারাজপুর ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদ ডিজিটালাইজেশনে রূপান্তর কার্যক্রম পরিদর্শন ও মদিনাবাদ স্মার্ট পোস্ট সেন্টারের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন করা মানুষের অনুভূতি শুনেন ও তাদের কার্যক্রম অবলোকন করেন।
১৮ থেকে ২১ মার্চ ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন সুইডিশ রাজকন্যা ভিক্টোরিয়া। তাঁর সফরের অংশ হিসেবে তিনি খুলনার কয়রা সফর করলেন।
প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে কথা বলা কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের নয়ানি গ্রামের সুফিয়া খাতুনসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৪১ হাজার জনসংখ্যার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ১২ গ্রামের মানুষের সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘদিনের। বছরের তিন মাস বৃষ্টির পানিতে চললেও বাকি ৯ মাস অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়। খাবার পানি নিরসনে ইউনিয়নের ভাগবা, মহেশ্বরীপুর, সাতহালিয়া ও নয়ানি গ্রামে চারটি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টার স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ১ হাজার ৬০০ উপকারভোগী কার্ড সিস্টেমের মাধ্যমে ছয় মাস খাবার পানি সংগ্রহ করতে পারেন। বাকি ছয় মাস এসব উপকারভোগীকেও ড্রামপ্রতি ৬০ টাকা দিয়ে খাবার পানি কিনতে হয়। তবে ঘরগৃহস্থালিসহ অন্যান্য কাজ নদীর নোনা পানি দিয়েই সারতে হয়। এতে সারা বছর তাদের স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগতে হয়। এ বিষয়ে তারা সুইডিশ রাজকন্যা ভিক্টোরিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, রাষ্ট্রীয় অতিথি কয়রায় আগমন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১ হাজার ৬০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ড, গোয়েন্দা নজরদারিসহ সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।