মোসলেম উদ্দিন: চলতি মৌসুমে দিনাজপুরে আমের ফলন চোখে পড়ার মতো। প্রথমের দিকে তীব্র তাপদাহে কিছুটা আমের গুটি ঝরে পড়লেও বর্তমান গাছে গাছে দুলছে নানান জাতের আম। আর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে আম পেড়ে বাজারজাত করবে আম চাষিরা।
এবার ১৩টি উপজেলায় ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে, জানিয়েছেন জেলা কৃষি অধিদপ্তর।
জেলার হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট, ধামের ক্ষেত, বাড়ির আশপাশসহ আমের বাগান ঘুরে দেখা যায়, চলতি মৌসুমে এবার জেলায় শিলাবৃষ্টি না হওয়ায় গাছে আমের ক্ষতি হয়নি। বাগানে কিংবা বসত বাড়ির সব গাছে প্রচুর আম ধরেছে।
বাগান মালিকরা বাগানে পানি সেচসহ যত্ন নিচ্ছেন। আবার আম ব্যবসায়ীরা বাগান মালিকদের নিকট থেকে বাগান ক্রয় করার জন্য যোগাযোগ করছেন।
এই জেলায় আম্রপালি, ন্যাংড়া ভোগ, নাগ ফজলি, হাঁড়িভাঙা, ফজলিসহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়ে থাকে। যেহেতু আমের ভাল ফলন দেখা যাচ্ছে, সেহেতু দামটাও এবার নাগালের মধ্যে থাকবে।
হাকিমপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের খলিল মিয়া বলেন, আমার বাড়িতে একটি হাঁড়িভাঙা, দুইটি আম্রপালি, একটি নাগ ফজলি আম গাছ আছে। গাছগুলো বেশি পুরাতন না। তাই সব গাছে পর্যাপ্ত আম ধরে। এবছরও ধরেছে। এসব আম বাড়ির সবাই খেয়ে শেষ করা যায় না। প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনদের বিতরণ করেও বিক্রি করি।
ঘোড়াঘাট উপজেলার উসমানপুর গ্রামের বাগান মালিক মন্জুরুল ইসলাম বলেন, ৫ বিঘার উপরে আমার আম বাগান। বাগানে সব জাতের আম গাছ রয়েছে। গত বারের মতো এবার ফলন ভালো হয়েছে। আম ব্যবসায়ীরা বাগান কিনতে আসছেন। আর কয়েক দিনের মধ্যে বাগান বিক্রি করে দিবো।
ঘোড়াঘাট উপজেলার কৃষি অফিসার মো. রফিকুজ্জামান বলেন, এবার এই উপজেলায় ১৭৯ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ২৫৯টি বাগান আছে। আমরা আম চাষিদের গাছের যত্ন নেওয়ার সুপরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি ফলনও অনেক ভালো হবে।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আরজেনা বেগম বলেন, হাকিমপুর উপজেলায় ৪৭ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বাগান রয়েছে ১৪৮টি। আমরা প্রতিনিয়ত বাগানগুলো পরিদর্শন করছি। আশা করছি ফলন ভাল হবে।
এবিষয়ে দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, চলতি মৌসুমে এবার জেলায় মোট ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। জেলায় তেমন কোথাও শিলাবৃষ্টি হয়নি। কৃষি অফিসাররা আম চাষিদের সেবা দিয়ে আসছে। আশা করছি, আমের বাম্পার ফলন হবে।