জয়ের হাসি মুখে নিয়ে সায়ন্তিকা যখন গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসছেন, বাইরে তখন তুমুল বৃষ্টি। তার মধ্যেই উৎসাহী কর্মী-সমর্থকরা আওয়াজ তুললেন, ‘বরানগরের এনার্জি, সায়ন্তিকা ব্যানার্জি’। কলকাতার উত্তরসীমান্তে অবস্থিত বরানগর বিধানসভা উপ নির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ হাসি হাসলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির সজল ঘোষকে ৮ হাজার ১৪৮ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন তিনি।
বরানগর বিধানসভার ভোট গণনা শেষ হতে রাত ৮টা পেরিয়ে যায়। টানটান উত্তেজনার মোড়া গণনা-পর্বে কোনও একটি রাউন্ডে এগিয়ে থেকে আবার পিছিয়ে পড়ায় উৎকন্ঠা বাড়ছিল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। প্রথম রাউন্ডে বিজেপি প্রার্থী ১৫০ ভোটে এগিয়ে যান। দ্বিতীয় রাউন্ডে সায়ন্তিকা ২৯ ভোটে পিছনে ফেলে দেন সজলকে। তৃতীয় রাউন্ডে তাঁর এগিয়ে থাকার ব্যবধান হয় মাত্র ৩৪৮ ভোট। কিন্তু চতুর্থ রাউন্ডে তিনি ৬৮২ ভোটে ফের পিছিয়ে পড়েন। পঞ্চম রাউন্ডেও ১৭৮ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন সায়ন্তিকা। ষষ্ঠ রাউন্ড থেকে তিনি জিততে শুরু করেন। ওই রাউন্ডে তিনি ৮৯৮ ভোটে জয় পান। সপ্তম রাউন্ডে ব্যবধান বেড়ে হয় ২,৬০০ ভোট। এরপর যত গণনা এগিয়েছে, তৃণমূলের হাসি চওড়া হয়েছে। আর কোনও রাউন্ডে সায়ন্তিকাকে পিছিয়ে পড়তে হয়নি। কিন্তু সপ্তম রাউন্ড পর্যন্ত গণনা শেষ হতেই বেলা ২.৩০টা বেজে যায়।
সকালের দিকে আধঘণ্টা গণনাকেন্দ্র থেকে বাইরে এসেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। বাকি সময়টা সারাক্ষণ তিনি ঠায় বসেছিলেন গণনাকেন্দ্রের মধ্যে। কখনও উদ্বিগ্ন হয়েছেন, কখনও আবার কর্মীদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠেছেন। যোগ্য নেত্রীর মতোই কাউন্টিং এজেন্টদের উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন সারাক্ষণ।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয়ের পর সায়ন্তিকা বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞ বরানগরবাসীর কাছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার উপর ভরসা রেখেছিলেন। তাঁদের মর্যাদার দাম দিতে পেরেছি। বাঁকুড়ায় পরাজয়ের গ্লানি ভুলিয়ে দিয়েছে গর্বের বরানগর। আমি বরানগরকে কোনও দিন ভুলব না। প্রত্যেকের পাশে থেকে সুখ-দুঃখের ভাগীদার হব।’