ঢাকা, ১৪ অক্টোবর : প্রতি বছর অক্টোবর মাসে ২য় সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সারা পৃথিবীতে ‘বিশ্ব দৃষ্টি দিবস’ পালিত হয়। ২০০০ সাল হতে বিশ্বব্যাপী চক্ষুসেবা কার্যক্রমকে বেগবান করার নিমিত্তে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
এ বছর বিশ্ব দৃষ্টি দিবস উপলক্ষ্যে যে প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে: আপনার চোখকে ভালোবাসুন; শিশুর চোখের যত্ন নিন। মানসম্পন্ন চক্ষুসেবা ও শিশুদের চোখের যত্নের উপর এ বছর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পরিবারের অভিভাবকদের এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে এবং প্রয়োজনে চক্ষু চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে ।
গত বৃহস্পতিবার সরকারী ছুটি থাকায় আজ সোমবার সারা দেশে এ দিবসটি গুরুত্বের সাথে পালিত হচ্ছে।
ইস্পাহানী ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট এ্যাণ্ড হসপিটাল কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গাজী নজরুল ইসলাম ফয়সল, পরিচালক-কমিউনিটি সাভির্সেস; শিশু বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডঃ মোস্তফা হোসেন; মেডিকেল সার্ভিসের উপ-পরিচালক মোঃ ডঃ সাজ্জাদ ইফতেখার, ডঃ এএসএম মইন উদ্দীন সহ হাসপাতালের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালকবৃন্দ, সহযোগী পরিচালকবৃন্দ, সহকারী পরিচালকবৃন্দ এবং কর্মকর্তা ও কর্মীবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বিশেষ সহযোগিতা প্রদান করে ‘২.৫ নিউ ভিশন জেনারেশন (এসিলর লুক্সোটিকা ইনিশিয়েটিভ)’ ও অপ্টোমেট্রি এসোসিয়েশন।
ইস্পাহানী ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট এ্যাণ্ড হসপিটাল ঢাকার বাইরে বরিশাল, জামালপুর, নওগাঁ, কুলাউড়া ও আমতলী চক্ষু হাসপাতাল সহ দেশের ১২টি জেলায় কর্মরত মোট ১৭টি প্রাথমিক চক্ষু সেবা কেন্দ্রে বিশ্ব দৃষ্টি দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে।
উল্লেখ্য যে, ঢাকার বাইরে মোট ২২টি চক্ষু হাসপাতাল ও সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে ইস্পাহানী ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট এ্যাণ্ড হসপিটাল এ বছর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিনামূল্যে চক্ষুসেবা প্রদানের জন্য চক্ষু ক্যাম্প পরিচালনা করছে। গত মাসে মোট ৭৬,০৩০ জন মানুষকে এই সেবা প্রদান করা হয়েছে। চলমান এ সেবা কার্যক্রম আগামী ৩১ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে এই দু’মাসে কর্মএলাকার ১২টি জেলায় মোট ১২৫,০০০ মানুষকে বিনামূল্যে চক্ষুসেবা প্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠানের আলোচনা-পর্বে আলোচকবৃন্দ বলেন: চোখের রোগগুলো সাধারণতঃ ব্যাথামুক্ত হয়। এজন্য আমরা বিশেষতঃ শিশুরা এটা বুঝতে পারে না। ফলে ধীরে ধীরে চোখের অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে এবং একটা পর্যায়ে অন্ধত্বের দিকে ধাবিত হয় অথচ একটু সচেতন হলেই চোখের এই অন্ধত্ব থেকে আমরা মুক্ত হতে পারি। আমরা যে অবস্থায় থাকি না কেন সবার আগে আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্য বিশেষভাবে চোখের যত্ন নিতে হবে কারণ চোখ ভালো না থাকলে আমরা অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বো এবং আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে পারবো না। চোখ দেহের ছোট্ট একটি অঙ্গ হলেও এর অসুস্থ্যতার কারণে শিশুদের পড়াশুনা, ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ও সামগ্রিকভাবে ভালো থাকা সম্ভব হয় না। এজন্য কোনভাবেই চোখের যত্নে অবহেলা করা যাবে না। চল্লিশ বছরের উর্ধে সকল মানুষেরই বছরে অন্ততঃ একবার চক্ষু পরীক্ষা করা দরকার; কারণ এই বয়সে সাধারণতঃ আমাদের চোখে দৃষ্টিগত সমস্যা দেখা দেয়। আজকের এই বিশ্ব দৃষ্টি দিবস সে কথাই আমাদের স্মরণ করে দিচ্ছে।
দিবস উদযাপন কর্মসূচিটি দুটি পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম অংশে দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর আলোচনা এবং পরের অংশে ছিল বর্ণাঢ্য র্যালি। র্যালিটি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে খামারবাড়ি এলাকা ঘুরে আবার হাসপাতালে এসে শেষ হয়। এ অনুষ্ঠানে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স সহ প্রায় ১৫০ জন কর্মকর্তা ও কর্মীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
এনবি/ঢাকা