বিডিমেট্রোনিউজ ॥ ভক্তদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় শেষ বারের মতো সিক্ত হলেন কবি শহীদ কাদরী। কবির ইচ্ছে ছিল, মরার আগে অন্তত একবার দেশে আসবেন। কবি আজ দেশে এলেন ঠিকই, কিন্তু লাশ হয়ে।
আজ বুধবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি বিমানে করে নিউইয়র্ক থেকে কবির মরদেহ ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। গত রোববার তিনি নিউইয়র্কে ইন্তেকাল করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে মরদেহ দেশে আনা হয়।
বিমানবন্দর থেকে কবির মরদেহ বারিধারার ডিওএইচএসে বড় ভাইয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। শেষবারের মতো ছোট ভাইয়ের মুখটি দেখলেন শাহেদ কাদরী। এরপর সেখান থেকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বেলা ১১টা ২০ মিনিটে কবির মরদেহ নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন ও বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল।
এরপর একে একে বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জাতীয় কবিতা পরিষদ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে কবি, কবিতানুরাগী, সাংস্কৃতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। লাইন দিয়ে সারিবদ্ধভাবে সবাই শেষ বারের মতো প্রিয় কবির মুখটি দেখেন।
কবির প্রিয় জায়গা বাংলা একাডেমিতে নেওয়ার কথা থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে তা বাদ দেওয়া হয়।
বেলা পৌনে একটার দিকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কবির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। সেখানে বাদ জোহর জানাজা হবে।
এরপর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে কবিকে অন্তিম শয়ানে শায়িত করা হবে।
১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন শহীদ কাদরী। কবি দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসজীবন যাপন করছিলেন। ১৯৬৭ সালে তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘উত্তরাধিকার’ প্রকাশিত হয়। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, পেয়েছেন একুশে পদক।
আগামী ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় কবির উদ্দেশে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে নাগরিক স্মরণ সভা হবে। আয়োজন করবে বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।