জাতীয় জাদুঘর থেকে সরলো জিয়ার স্বাধীনতা পদক

বিডিমেট্রোনিউজ জাতীয় জাদুঘর থেকে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি দল জাতীয় জাদুঘরে গিয়ে পদকটি সরিয়ে নেয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্থার) এম এন জিয়াউল আলম বলেন, জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি জিয়াার স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের সুপারিশ করে। এরপর সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে পদকটি সরিয়ে আনা হয়।

সংস্কৃতি সচিব আকতারি মমতাজ বলেন, জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পদ দেয়, ওই কমিটি পদকটি প্রত্যাহার করেছে। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় জাদুঘর থেকে পদকটি সরিয়ে নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। তারা বলেছেন, জাদুঘরে পদকটি থাকবে না। এরই ভিত্তিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পদকটি সরিয়ে নেয়।

এ বিষয়ে জাতীয় জাদুঘরের উপ-পচিালক কবি শিহাব সরকার বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার দুপুর ১২টার দিকে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনাতা পদক সরিয়ে নেওয়া হয়।’

সরিয়ে নেওয়া এ পদকটি কোথায় রাখা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিষয়। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’

২০০৩ সালে বিএনপি নেতৃত্বধীন চারদলীয় জোট সরকার জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেয়। ওই সময় জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে পুরস্কারের মেডেল, সম্মাননাপত্র কোনো উত্তরাধিকারীকে না দিয়ে বাংলাদেশ জাদুঘরের একটি কর্নারে যথাযোগ্য মর্যাদায় সংরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

একই বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হলে তখন বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগ এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জিয়াউর রহমানকে পুরস্কার দেওয়ায় আপত্তি তোলে দলটি।

চলতি বছরের জুলাই মাসে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে একটি নথি কমিটিতে পাঠানো হয়। যেখানে প্রয়াত জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রপতি পদ বা রাষ্ট্রপতি হিসেবে রাষ্ট্রমতায় আরোহণের বিষয়টি হাইকোর্টে রিট পিটিশন আদেশের মাধ্যমে অবৈধ ঘোষণার কথা উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া নথিতে স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত সংশোধিত নির্দেশমালার বিষয় উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। তাই এই পুরস্কারের জন্য চূড়ান্তভাবে প্রার্থী নির্বাচনকালে দেশ ও মানুষের কল্যাণে অসাধারণ অবদান রেখেছেন এমন সীমিত সংখ্যক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেই বিবেচনা করা হয়।

গত ২৪ আগস্ট জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এসব বিবেচনা করে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাহারের সুপারিশ করে।  পরে বিএনপির থেকে পদক প্রত্যাহারের বিষয়টি এক ধরনের ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করা হয়।

কমিটির সুপারিশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পদ প্রত্যাহারের একটি সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হলে তা অনুমোদন হয়। পরে বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি দল জাতীয় জাদুঘরের গিয়ে পদকটি সরিয়ে আনে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts