মুহাম্মদ শওকাত হোসেন
অসংখ্য নবী আ: দের পবিত্র স্মৃতি বিজরিত পবিত্র কুরআনে বর্নিত দুটি পবিত্র মসজিদের একটি এবং ইসলামের প্রথম কিবলা ও যে তিনটি মসজিদের সওয়াবের নিয়তে সফর করা যাবে তার একটি বায়তুল মাকদিস আল কুদস আস শরীফ। দীর্ঘ ৭০ বছর যাবৎ বিশ্বের নিকৃষ্টতম বর্ণবাদী সাম্প্রদায়িক মতবাদ ‘যায়নবাদ (ইহুদীবাদ) এর বিষাক্ত ছোবলে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত ও নিস্পেষিত হচ্ছে।
৭০ বছর যাবৎ বহিরাগত ইহুদীবাদের সন্ত্রাসী দখলদাররা পবিত্রভূমি ফিলিস্তিনের নিরপরাধ মুসলিমদের উপর উৎখাত, হত্যা নির্যাতন নৃশংসতার স্টিম-রোলার চালিয়ে যাচ্ছে। লক্ষ লক্ষ মুসলিমদেরকে নিজ বাসগৃহ থেকে উৎখাত করে সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তুলে এনে ইহুদীদের বসতি স্থাপন করছে। সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ আমেরিকার ষড়যন্ত্রে ফিলিস্তিনের বুকের উপর অবৈধ কৃত্তিম রাষ্ট্র অভিষপ্ত ইসরাইল এর জন্ম দিয়েছে। সাম্রাজ্যবাদীরা সব মারনাস্ত্র আর পারমানবিক অস্ত্রে সজ্জিত করেছে তাদের সৃষ্ট বিষবৃক্ষ ইসরাইলকে।
ইসরাইলের ইতিহাস হত্যা নির্যাতন দখলদারিত্ব আর নির্মমতা ও নৃশংসতার ইতিহাস। শুধু ফিলিস্তিন নয় ওদের আক্রমন আর নৃশংসতার শিকার হয়ে প্রান হারিয়েছে লেবানন, জর্দান, মিশর, সিরিয়ার অসংখ্য মুসলিম জনগন। ১৯৪৮ সালের আগ থেকে যে নির্যাতন নির্মমতা শুরু হয়েছে তা আজ মানবতার দুষমন ইসলাম ফোবিয়ায় আক্রান্ত, সাইকিক ডোনাল্ড ট্রাম্প এর প্রত্যক্ষ মদদে তা নৃশংসতার সকল সীমা অতিক্রম করেছে।
আজ সময় এসেছে ৭০ বছরের নির্যাতন নির্মমতা হত্যাযজ্ঞ তথা মানবতার বিরুদ্ধে পাহার সম অপরাধের হিসাব নেয়ার। বিশ্ব মুসলিমের ঐক্য সংগ্রাম তথা জ্বিহাদের মাধ্যমে অবৈধ বায়বীয় রাস্ট্র ইসরাইলের বিলুপ্তি এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন ও মুক্ত বায়তুল মাকদিস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই তা সম্ভব হবে।
সাম্প্রতিক ঘটনা:
১৪ মে ২০১৮। ইসরাইল এর প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এবার আল কুদস তথা জেরুসালেম এ তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তর উপলক্ষে আনন্দানুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর কন্যা ইভানক ও জামাতা জেরাল্ড কুশনার। ১৫ মে আল নাকবা মহা বিপর্যয় দিবস সামনে রেখে হামাস এর আহ্বানে চলছে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ। হাজার হাজার বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে ট্যাংক সহ মারনাস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমেছে ইসরাইলী সেনা বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের একমাত্র অস্ত্র ‘পাথর’। পাথরের জবাবে ইসরাইলী হানাদার বাহিনী ব্রাসফায়ারে শহীদ হলো ৬০ জন ফিলিস্তিনি, আহত হলো ২ হাজার ৭শত এর বেশী ফিলিস্তিনী। যার মধ্যে শিশু, নারী, বৃদ্ধও রয়েছে। গত ২০ দিনে ১ শর বেশী ফিলিস্তিনি প্রাণ দিয়েছে ইসরাইলী হানাদারদের হাতে। এর মধ্যে আহতদের সেবায় নিয়োজিত ফিলিস্থিনি নার্সকেও নির্মমভাবে হত্যা করেছে ওরা। এটা ১দিনের ঘটনা নয় এভাবেই চলছে প্রতিদিন, প্রতি মাস, প্রতি বছর দীর্ঘ ৭০ বছর কিংবা তারও বেশী সময় ধরে।
ঘর হারা, বাড়িহারা, প্রিয়জন হারা উদ্বান্তু শিবিরের জন্ম নেয়া মানুষগুলো তাদের মাতৃভূমি উদ্ধারের আকাংখায় প্রতিনিয়ত এভাবে অস্ত্র গোলা বারুদ নয় হাতে পাথর আর অন্তরের তীব্র ক্ষোভ নিয়ে এভাবেই মুক্তি সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। এর বিনিময়ে সকল রকম মারনাস্ত্র ও পারমানবিক অস্ত্র সম্বলিত ইসরাইলী বাহিনীর ব্রাস ফায়ারে প্রান দিচ্ছে অহরহ। নারী শিশু বৃদ্ধ কেউ রেহাই পাচ্ছে না এ হায়েনাদের হাত থেকে। এ অবস্থা চলছে ৭০ বছর ধরে।
বায়তুল মাকদিস বা আল কুদস সম্পর্কিত তথ্য:
মসজিদে আকসা সম্পর্কে পবিত্র কুরআন মজিদে দুবার উল্লেখিত হয়েছে। মক্কার ১৩ বছর এবং মদীনায় ১৭ মাস মুসলমানদের ক্বিবলা ছিলো মসজিদে আকসা। বিভিন্ন বর্ণনায় এ মসজিদ ফেরেশতাদের তৈরী, হযরত আদম আঃ কর্তৃক নির্মিত, হযরত শিশ আঃ, হযরত নূহ আঃ হযরত ইব্রাহিম আঃকে নির্মাতা হিসেবে বলা হয়েছে। বোখারী শরীফের ৩১৮৬নং হাদীস অনুযায়ী আবুজায় গিফরী বর্নিত হাদীসে কাবা গৃহের ৪০ বছর পর মসজিদে আকসা নির্মিত হয়েছে বলে বলা হয়েছে।
১ লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার বর্গমিটার এরিয়ার উপর বায়তুল মুকাদ্দাস বা আল কুদস শহর অবস্থিত। এখানে মসজিদ আকারে ২টা স্থাপনা রয়েছে। প্রধান মসজিদ মসজিদে কিবালী ও মসজিদে কুব্বাতুহ ছাখরা ও মুছাল্লা (মসজিদ) হিসেবে রয়েছে আরো ৫টি স্থাপনা। ছোট বড় মিলিয়ে ১৫টি, গম্বুজ, ১২টি, মাদরাসা, ২৫টি কুপ, ২৩টি মাসতাবা (খালি মাঠে বর্গকৃতির উচু যায়গা) ৮টি বায়েকা (গেট সাদৃশ্য একাধিক স্তম্বের স্থাপনা) ৪টি আযানখানা সহ বিভিন্ন ধরনের ১৯০টি স্থাপনা রয়েছে। মসজিদে আকসার ১৫টি দরোজার ১০টি ব্যবহৃত হচ্ছে। এর উপরে রয়েছে সীসার গম্বুজ, এটা ১৫ হিজরীতে খলিফা ওমর রা: নির্মানের নির্দেশ দেন। এখানে দাঁড়িয়ে খতিব ইমামতি করেন। কুব্বাতুছ ছাখরা (পাথর গম্বুজ মসজিদ) ইসলামী স্থাপত্যের প্রাচীন ও অন্যতম নির্দশন খলিফা আবদুল মালেক বিন মারোয়ান ৬৬ থেকে ৭২ হিজরীতে এর নির্মান সম্পন্ন করেন। এর অভ্যন্তরে বৃত্তের মাঝখানে পাথর রয়েছে। যার উপর দাঁড়িয়ে বোরাকে আরোহন করে মহানবী স: মেরাজে গেছেন।
মহাদুর্যোগ ও দখলদারিত্বের ৭০ বছর:
তারও আগে ১৯১৭ সালে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী অর্থার জেমস বেলফোর ইহুদীদের জন্য ফিলিস্তিনে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষনা দেন। এরপরই যায়নবাদী ইহুদীরা বৃটিশ সহযোগীতায় ফিলিস্তিনে জমি ক্রয় করে অনুপ্রবেশ শুরু করে। তাদরে চক্রান্তের নীল নকশা অনুযায়ী ১৯৪৮ সালকে টার্গেট করা হয়। ১৯৪৫ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান ফিলিস্তিনে একটি ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ব্যাক্ত করেন। বৃটিশ সেনাদের সহায়তা নিয়ে ১৯৪৭ সালে বোমা ও মাইন বিস্ফোরন করে ফিলিস্তিনের অনেকগুলো গ্রাম সমূলে ধ্বংস করে মুসলমানদের হত্যা অথবা বহিস্কার করে সেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে এনে ইহুদীদের পূনবার্সন শুরু করা হয়।
অবৈধ ইসরাইলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জল্লাদ বেন গুরিয়ান তার ডায়রীতে ১৯৪৮ সালের ১২ মে তারিখে লিখেছেন ‘আজ দারাস গ্রামে মর্টার হামলায় ৫০জন আরব নিহত হয়েছে। বাকীরাও গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। একই দিনে বাসিত ও সাত্তয়াদী নামে আরো দুটা গ্রাম দখল করেছে।” (যুদ্ধের দিনগুলো ১৯৪৭-৪৯) ১৯৪৮ সালের ১৪ মে তেল আবিবকে রাজধানী করে বেন গুরিয়ানকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা করে ফিলিস্তিনের বুকের উপর অবৈধ রাষ্ট্র ‘ইসরাইল’ এর জন্ম দেয়া হয়। ঘোষনার মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট টারভিন ইসরাইলের স্বীকৃতি দিয়ে পাশে দাঁড়ায়। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ফ্রান্স ও রাশিয়া স্বীকৃতি দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে প্রচুর পরিমান অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অর্থ দিয়ে ইসরাইলকে ভয়াবহ, আগ্রাসী পারমানবিক রাষ্ট্রে পরিনত করা হয়। উদ্দেশ্য একটাই আরব ও মুসলিমদেরকে আজীবনের জন্য পর্যদুস্ত করে রাখা।
শুরু হয়ে যায় অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের গণহত্যা, রাহাজানী, দখল, লুটপাট, মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্যতম সব অপরাধ। যা দীর্ঘ ৭০ বছর যাবৎ সমানে চলছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ মোড়লরা একদিকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়েছে অন্যদিকে বারবার ভেটো প্রয়োগ করে জাতিসংঘের সব প্রস্তাব ও উদ্যোগকে ভন্ডুল করে দিয়েছে।
নির্যাতন নির্মমতার কিছু উদাহরন:
রাষ্ট্র ঘোষনার দিনই ইয়ামিন গ্রামের ৪০০ অধিবাসীর ২৫০জনকে হত্যা করে। অনেকের অঙ্গ প্রতঙ্গ কেটে নেয়। জলন্ত আগুনে পুড়ে মারে, চোখ তুলে নেয়, নারীদের স্তন্য কেটে নিয়ে নির্যাতনের অশুভ সুচনা করে। ৪৮ সালে আল্লাদ ও রামাল্লার কয়েকশত মানুষকে হত্যা করে। ১৯৪৮ সালে নাসিরুদ্দিন গ্রামের ৪০জন বাদে সবাইকে, কাবু গ্রামের ২০জন বাদে সবাইকে, দারোস গ্রামের সবাইকে ইসরাইলী জল্লাদ বাহিনী মসজিদে এনে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে হত্যা করে।
এভাবে শুরুতেই তারা পশ্চিম জেরুসালেম দখল করে নেয়। ৩ বছরে ১০ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনী মুসলিম নিজেদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ হয়ে জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া কিংবা অন্য কোথাও উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। গৃহহীন ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা পরবর্তীতে ৫০ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারন পরিষদে ফিলিস্তিনের জনগনকে নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হলেও দীর্ঘ ৭০ বছরে সে প্রস্তাব বাস্তবায়ণ করা সম্ভব হয়নি।
৭০ বছরে ইসরাইলী জল্লাদদের অপরাধের ইতিহাস এ সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধে উপস্থাপন সম্ভব নয়। এরা ১৯৮২ সালে লেবানন দখল করে ২৫ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। ইন্তেফাদার ৫ বছরে ১৬ শ’র বেশী শিশু কিশোরকে হত্যা করেছে। ৬০ থেকে ৭৫ হাজারকে আহত ও বিকলাঙ্গ করেছে। গণহত্যা, গণগ্রেফতার, কারাগারে নির্যাতন করে হত্যা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাদানে গ্যাস, বোমা ইত্যাদি নিক্ষেপ ওদের নিত্য নৈমিত্যিক বিষয়। ওরা ১৯৮৩ সালে ‘সাবরা’ ‘শাতিলা’ রিফিউজি ক্যাম্পে আক্রমন করে শত সহস্ত্র নিরপরাধ উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে। ১৯৬৫ সালে ৫ বার জর্ডানে বোমা হামলা করে ২ শতাধিক মানুষ হত্যা করে। ১৯৯৪ সালে আল খলিলে হযরত ইব্রাহিম আঃ এর মাজার সংলগ্ন মসজিদে হামলা করে শতাধিক লোককে হত্যা করে। ১৯৯৬ সালে লেবাননের কুনা শহরে হামলা করে ১৭০জনকে হত্যা করে। ২০০০ সালে সূচিত ২য় ইন্তিফিদা ২০০৯ সাল পর্যন্ত ৬৩৪৮ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। ২০০৬ সালের ১২ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত সাড়ে ১১শ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
১৯৬৭ সালে ওরা ফিলিস্তিনের বাকি অংশসহ মিশরের সিনাই ও গাজা, সিরিয়ার বেকা জর্ডানের অধীন্থ পশ্চিম তীর সহ বিশাল আরব ভূমি অনেক রক্ত ও লাশের উপরে দখল করে নেয়। ১৯৬৯ সালের ২২ আগস্ট বর্ণবাদী ইহুদী ঘাতক ‘রোহান’ মসিজদে আকছায় আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে মসজিদে কিবালী (মূল মসিজদ) ও সালাউদ্দিন নির্মিত মিম্বর পুড়ে যায়। বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়। এরই প্রেক্ষিতে ১ মাস পর ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯ সালে মরোক্কর রাবাতে মুসলিম দেশ সমূহের শীর্ষ নেতারা সম্মেলন করে ফিলিস্থিন ও মুসলিম স্বার্থ রক্ষার লক্ষে ওআইসি গঠন করে। এর প্রথম মহাসচিব ছিলেন মালয়েশিয়ার নেতা টেংকু আবদুর রহমান। ১৯৭২ সালে জর্ডান পুড়ে যাওয়া মসজিদের সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
ইসরাইল ১৯৮২ সালে লেবাননের বৈরুত সহ বিশাল এলাকা দখল করে নেয়। ২০০৭ সালে হেজবুল্লাহর সঙ্গে ৩৪দিন ব্যাপি যুদ্ধ হয়। ২০১৪ সালে ৯ জুলাই থেকে শুরু হয় নতুন করে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা ও হত্যাযজ্ঞ। এতে ২২ জুলাই পর্যন্ত ৬০০ এর বেশী ফিলিস্তিনি সাহাদাত বরণ করে। ২০১২ সালেও একই ভাবে ৮ দিনের যুদ্ধে ১৭০ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়।
১৯৮০ সালের ৩০ জুলাই ইসরাইলী পালার্মেন্ট ‘নেসেট’ জেরুসালেম তথা আল কুদসকে ইসরাইলের ‘চীরকালীন’ রাজধানী ঘোষনা করে। ১৯৯০ সালে মার্কিন সিনেট বায়তুল মোকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় (৩৭৮/৩৪ ভোটে)। তারও ২৮ বছর পর ইসলাম মানবতার শত্রু ডোনাল্ড ট্রাম্প এর নেৃতত্বে যুক্তরাষ্ট্র গত ১৫ মে ইসরাইলের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দূতাবাস তেল আবিব থেকে আল কুদস এ স্থানান্তর করলো যার মূল্য দিলো শতাধিক শহীদ ফিলিস্তিনী জীবন দিয়ে, আর প্রায় ৩ হাজার আহত হয়ে।
আজ সময় এসেছে বিশ্ব মুসলিমের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। লেবানন ও ফিলিস্থিনের মুক্তিকামী জনগন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইহুদীবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সকল মুসলিম ও মানবতাবাদী মানুষকে এ সংগ্রামের পক্ষে সর্বাত্মক সমর্থন জানাতে হবে। হারামাইন শারিফাইন এর নিরাপত্তার নামে মুলত রাজতন্ত্রের প্রতিরক্ষার জন্য ওদের নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে মুসলিম বিশ্বের যৌথ বাহিনি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। অথচ আজ প্রয়োজন ইহুদীবাদের দখলকৃত আমাদের প্রথম কিবলা পবিত্র মসজিদুল আকসা মুক্ত করার লক্ষে মুসলিম বিশ্বের যৌথ বাহিনী গঠন।
আমরা আশা করব সারা বিশ্বের মুসলিম স্বেচ্ছাসেবী মুজাহিদদের নিয়ে যায়নবাদের বিরুদ্ধে আল কুদস কে মুক্ত করার লক্ষে যৌথ প্রতিরোধ আন্দোলনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিশ্ব মুসলিমদের সর্বাত্মক সমর্থন ও অংশগ্রহনের মাধ্যমে বিশ্বের অশুভ শক্তির সৃষ্ট অবৈধ কৃত্তিম রাষ্ট মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোড়া ইসরাইলের বিলুপ্তি ঘটানের মাধ্যমেই ফিলিস্থিনের স্বাধীনতা, আল কুদস এর মুক্তি এবং বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব।
৮ জুন শুক্রবার আল কুদস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারের জন্য লিখিত প্রবন্ধ
মুহাম্মদ শওকাত হোসেন : সাবেক অধ্যক্ষ ও সম্পাদক দৈনিক আজকের ভোলা।