লিখছি তোমায়
তুমি আমার চেতনায় আছ
আমার ভাবনায় আছ তুমি
লিখছি, লিখছি তোমায়
তুমি সামনে এই তো সামনে
হ্যাঁ এই তো ছুঁতে পারছি
এই তো সোনালী রোদ তোমার শরীর ঝরে পড়ছে
সূর্য সুগন্ধি কিরণ চন্দনে তোমায় ভিজিয়ে দিচ্ছে
উফ: সুন্দর দেখাচ্ছে
কি সুন্দর লাগছে তোমায় দেখতে
অনেক দিন পর দেখা, তাই নয় ?
এভাবে আসবে মুখোমুখি হবে ভাবনি ভাবনি তো ?
কেমন চমকে দিলাম বলো ?
হ্যাঁ,হ্যাঁ মানছি আগে জানলে আমার পছন্দের
এক গুচ্ছ সাদা দোলনচাঁপা দহন অন্তত তুমি
আনতে ? জানি, জানি সেই অনুশোচনায়
তোমার নির্ঘুম কাটবে শতাব্দী সেটিও জানি
রাগ করোনা লক্ষ্মীটি ! দাঁড়াও একটু চুপটি করে
এখুনি….আকাঙ্ক্ষার উষ্ণ আঁচড়ে
তোমার হাতে প্রথম বসন্তের হলুদ বুনো গোলাপ
আর ওই উত্তর দিকে দুষ্টু কোকিলের গোপন স্বরলিপি
এঁকে দিচ্ছি দেখ.. হ্যাঁ ….এই তো…এবার ? চলবে তো ?
জানি খুশি হবে ৷
এই দেখ, তুমি দাঁড়িয়ে, তুমি দাঁড়িয়ে রইলে যে ?
আমিও যেমন একবার বসতেও বলিনি তোমায়
তুমি হাসছ ? দুঃখিত.. দুঃখিত
তবুও তুমি হাসছ ?
জান, তোমার হাসিটি বড় অদ্ভুত ?
এক পৃথিবী দুঃখ ভুলিয়ে দিতে যথেষ্ট ওটুকুই
হাসছ ? আচ্ছা বাবা আচ্ছা মাফ চাইছি
চল ! ওদিক টায় চল !
কেমন আকাশ সাজিয়েছি দেখবে ? চল !
মেঘের গালিচায় বসে কড়া চায়ে
চুমুক দিতে দিতে নক্ষত্র জ্যোতিতে কলম
চুবিয়ে হৃদয়ের মহাকাব্য লিখব দুজন
হাসছ কেন ? আবার হাসছ ?
বলে রাখছি ভালবাসার পেয়ালায় আমার
দু চামচ চুমু ব্যস ! ওতেই চলবে, বুঝেছ ?
বেশী মোটেই নয়, আর তোমার ?
চুমু চুমু চুমু, অনেক অনেক বেশী
দু চামচে চলবে না ?
জানি মশাই, জানি সে বুঝেছি
কি ? কি ……বলছ ?
শুনতে পাচ্ছি না?
হাওয়া এলো ৷ পা….তা পাতা উল্টে যাচ্ছে
ঠিকানাটি চাই
বলেছিলাম তোমার ঠিকানাটি চাই
লিখে দিবে ? হারিয়ে ফেলেছি অনেক দিন হয়
লিখে দিবে একটু ?
তুমি নীল আকাশটি টেনে
রোদের কালিতে কি যেন লিখতে বসলে
বললে ‘ দিচ্ছি !’ ‘ দাঁড়াও ! ‘
খানিক ভাবলে লিখলে অনেকক্ষণ আঁকলে
তারপর আমায় এগিয়ে দিয়ে বললে ‘ এই নাও ঠিকানা ! ‘
চোখের আলোয় মেলে ধরলাম আকাশ
দেখলাম এঁকেছ
চাঁদের অট্টালিকা পেঁচিয়ে উঠেছে
ধাপে ধাপে নিখুঁত উল্কার সিঁড়ি
মঙ্গলের বাগান, বৃহস্পতির কাঁকরে মেরুন
টলটলে নদী, কি নাই ?
বললাম ‘ বাহ ‘
‘ সে তো অনেক দূরের পথ ‘
তুমি বললে ‘ দূরে নয় ‘
‘ একদম কাছে এই তো ?’
‘ বুকের বাম দিকে হৃদয়ের মাঝে ‘
‘ চলে এসো নৌকা ভাসাব ‘
আমার কি হয় ?
আমার কি হয় ? কি হয় আমার ?
তুমি সামনে আসলে আমার শ্বাসযন্ত্র বিকল হয়
আমি ঠিক করে দম নিতে পারিনা
এন্টার্কটিকার সকল হিম আটকে যায় স্বর খনিতে
সিরক্কো,হারমাট্টান,লু ঝড়ে উড়তে থাকি
কেঁপে জ্বর হতে থাকে, লোমকূপ তাতে গনগনে লাল
যদি তাপমাত্রা নিতে চাইতে, ক্যালরিমিটার, থার্মোমিটার ছোঁয়াতে
দেখতে পারদের পাড়ায় কি ভয়ঙ্কর বিপত্তি ঘটে যাচ্ছে চুপিসারে
অসহায় জ্বালা মেঘে আচ্ছন্ন হতে থাকি, গোলাপি হতে থাকি
মনে হয় মুহূর্তে ডুবে যাচ্ছি বঙ্গোপসাগর,প্যাসিফিক, আটলান্টিকের তাবৎ জলে
তোমার-সাগরে নিমজ্জিত হচ্ছি, হিমশিম খাচ্ছি, বিবর্ণ মেরুন কাঁকরে তলিয়ে যাচ্ছি
বাঁচাবার জন্য কোন ডুবুরি নেই, অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, মাস্ক নেই
কোথাও ? কোথাও ?
সাঁতার জানিনা, জানলেও ভুলে যাই যেন কোনদিন জানতাম না
হাত পা ছুঁড়তে থাকি আকুপাকু অদৃশ্য
কেউ দেখতে পায়না, তুমিও দেখতে পাও না
নিজের চাই-পাথরে নিজেই চাপা পড়ে যেতে থাকি, বিস্মৃত হতে থাকি
দৃষ্টিহীন হতে থাকি, বধির হতে থাকি তোমার চুম্বক আঁধিতে
তুমি চোখের আড়াল হলে তো মরণ
একটি আত্মার করুণ পরাজয়
তুমি সামনে আসলে আমার যেন কি হয় সোনা ?
যেন আমার কি হয় ? কি হয় ?
মৃত্যুই ঘটে যায় ৷
আমি বলতে পারিনি
তোমার চোখে অমর ভালবাসার ডম্রুপানি
ঝোপ দেখেছিলাম
আমি বলতে চেয়েছিলাম দেবদূত তুমি কিছু
চুম্বনমালা গেঁথে দিও আমি তোমায় পরাব
কিন্তু লজ্জাবতী লতার মত কেমন লুকিয়ে
গিয়েছিলাম আমি বলতে পারিনি
বলতে গিয়েও বলতে পারিনি
একটি দুষ্টু প্রজাপতির পায়ে আমি
এঁকে দিয়েছিলাম আমার ইচ্ছার জল রং
বলতে পারিনি স্বর্ণচাঁপা বনে এসো
তোমাকে একটি নীল সরোবর দেখাব
সেই সরোবর সমুদ্রের মতন অশান্ত
ঢেউগুলি আছড়ে পড়ে কমলা বালুচরে অসংলগ্ন
আমি একটি চঞ্চল ফড়িং এর
চিকচিকে পাখায় লিখে দিয়েছিলাম
আমার অবচেতন উষ্ণতার তীব্রতায়
তোমায় একটু ছোঁব !
তুমি আজকাল স্বপ্নেও আসোনা
অনেক দিন হয় তোমাকে দেখিনা
তুমি আজকাল স্বপ্নেও আসোনা
কল্পনার অলিতে গলিতে তোমাকে মাঝে মাঝে
ফুল কিনতে দেখতাম দু’হাতে গ্লাডিওলাস, ক্রিসিনথিমাম
কখনো হাতে নয়নতারা, সূর্যমুখীর ব্যুকে
হলুদ শার্টে ঢুকে তুমি হাসতে থাকতে
বরং এখন হাসিটা আরো যেন মধুর হয়েছে
আরো রহস্যময় হয়েছে
চোখে নীল রে ব্যন,
তুমি হাসতে হাসতে ঝাপসা হতে হতে
মিলিয়ে যেতে পার্ক রোডে
আবার কখনো দেখতাম গুলশান এভিন্যুতে
গ্লোরিয়া জিনস কফি শপের সামনে
টেক এ্যওয়ে ঝুলিয়ে অস্থির উবার খুঁজছো
তখনও হাতে থাকত অপরাজিতা, চন্দ্রমল্লিকার বন
আর ঠোঁটের বারান্দায় অদ্ভুত সুখ
সে অনেক দিন হয়