আমাদেরকে মানুষ করো
শি উ ল ম ন জু র
বোধ করি লোকালয় ছেড়ে চলে যাবার সময় এসে গেছে।
কিন্তু কোথায় যাবো!
জঙ্গলের হিংস্র বাঘ, ভাল্লুক, সিংহরা দখল নিতে
যাচ্ছে লোকালয়। জঙ্গলে তাদের আর ভাল্ লাগছে না। হরিণ
জিরাফ কিংবা মহিষের রক্তে তাদের অরুচি ধরে গেছে।
মানব শরীরের রক্ত তাদের ভালো লাগতে শুরু করেছে।
তাইতো এতো রক্তপাত। মসজিদে ইশকুলে মহল্লায় বারুদ
ঝলসানো লাশের মিছিল।
তারা ছুটে আসছে লোকালয়ে। তাদের ভাল্ লাগেনা
ঘর বাড়ি সংসার। তাদের ভাল্ লাগেনা ফুল পাখি প্রজাপতি।
তারা আয়নায় নিজেদের মুখ দেখে না। চোখে রাখে না
চোখ। তারা নিঃশব্দে পৌঁছে যাচ্ছে, ধর্মের কর্মশালায়। তারা
জেনে গেছে, ওখানে ধর্মকর্মের নিরীহ মানব সভ্যতাকে যদি
মৃত্যুর বাঁশি বাজিয়ে হত্যা করা যায়, তবেই তো রক্ত মাংসের
স্বাদ নেয়া যাবে সহজে। নিজেদের আধিপত্য নিয়ে আর
থাকবে না সংশয়।
তারা ছুটে আসছে লোকালয়ে আর নতুন ঢংগে ও
রঙে, সভ্যতা নির্মূলের হোলিউৎসবে মেতে উঠেছে।
মানববিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অশুভছায়ার তাবু ফেলেছে তারা।
গড়ে তুলেছে মারাস্ত্র নির্মাণের গোপন শিল্পাঞ্চল;
তারা যে, আরাধনায় বিশ্বাস করে না।
তারা যে, স্বপ্ন সৌন্দর্যে বিশ্বাস করে না।
তাদের যে, ভাল্ লাগে না চাঁদের কিরণ।
তাদের যে, ভাল্ লাগে না বসন্তবেলা।
সোনালি রূপালি ঢেউ তাদের বুকে মমতার কোমল
স্পর্শ জাগায় না।
শিশুদের স্বর্গীয় হাসিতে ভরে না প্রাণ।
কোরান, ইঞ্জিল, জাবুর, বাইবেল কখনো করেনি
পাঠ।
সীমারের রূপ অন্তরে বাহিরে।
শান্তির বার্তায় তাদের কিছু যায় আসে না।
রক্ত বন্যায় সাঁতার কাটে।
এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে আজ রক্ত উৎসবে ঘুরছে।
তাদের মুখ ও মুখোশ ভয়ঙ্কর প্রাণীদের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
কারবালার প্রান্তরে যেনো প্রবেশ করছে গোটাবিশ্ব।
বোধ করি লোকালয় ছেড়ে চলে যাবার সময় এসে গেছে।
কিন্তু কোথায় যাবো!
তাই তো বারবার বিধাতাকেই স্মরণ করি আর বলি,
আমাদেরকে মানুষ করো, সীমার বানিও না।