কাছে পাশে থাকি
কি-বা না থাকি
রিচি কি বা রাঁচি,
যমুনার তীরে কিংবা খোয়াই
যতদূরেই যাই,
তুমি তো রয়েছো সদাই,
বুকের বাম পাশ টায়;
অগোচরে-চুপিসারে
কেউ জানিতে না পায়।
লুকোচুরি আলো ছায়ায়,
নিত্য খেলছো ছলা কলায়;
আমার দু’চোখের তারায়;
বেলা, অবেলায় আর নিরালায়।
নীলাকাশের মাঝেও তুমি
মুখ লুকিয়ে হারাও মেঘের ভেলায়।
বন-বনানীর মাঝে তুমি উঁকি দিয়ে যাও।
ডাগর চোখে বাঁকা চাহনিতে দোলা দিয়ে যাও
মনের সোনালী ধান ক্ষেতে।
মুক্তার ঝিলিক হাঁসি
ছড়াও তুমি তরঙ্গিণীর স্রোতে।
আঁধারের মাঝে এসে,
বসো পাশে ভালবেসে;
মন ছুঁয়ে যাও হেয়ালী হেসে।
পাষাণও কি থাকতে পারে!
তোমায় না ভালবেসে?
ক্ষণিকের মাঝে এসে তুমি
পরক্ষণেই হাওয়ায় মিলাও।
না যায় ছোঁয়া, না দাও ধরা;
তুমি আজো অজয়া-অধরা।
তুমি তো চিরদিনের
দূর আকাশের তারা।
রূপালী সৈকতে
মিষ্টি মুখে দুষ্ট কথা
শুনতে ভারী লাগে
বাঁকাহাঁসির চাঁদ মুখখানা
স্বপ্ন মাঝেও জাগে!
সোহাগ আদুরে শাসনে
যখন আমায় পাগল বলো,
আমি বলি শতবার বলো
কর্ণে স্বর্গ-সুধা ঢালো!
পাশাপাশি যখন থাকি
অনাবিল সুখ আসে,
সেই সুখ স্মৃতিমালা
মনের মাঝে ভাসে।
এমন আবেগঘন মধুক্ষণ
যদি আর না ফিরে আসে।
অবশেষে যদি যাও হারিয়ে
ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে
তুমি কি তখনও বাইবে তরী
ভালবাসার রূপালী সৈকতে!
হৃদয়েশ্বরী
কখনো সজনী কখনো নীলা
কখনো মৌ কখনো বা হিয়া।
কখনো উর্বশী কখনো শিলা,
কখনো মানসী কখনো বা প্রিয়া।
যে নামেই করি ডাকাডাকি
আসলে সে কে?
ঘুরে ফিরে আসে বারে বারে,
জীবন নদীর প্রতি বাঁকে বাঁকে!
সে কি রক্ত-মাংসের মানবী!
নাকি কল্পিত অশরীরী।
কিম্ভুত কিমাকার,
নাকি ডানা কাটা পরী!
আমিই কি জানি!
কে সেই হৃদয়েশ্বরী?
মন ছুয়ে যাওয়া,
মনোরাজ্যের সেই অপ্সরী!
কেউ বলে আবাস তাঁর
চূড়ামনকাঠি অথবা চান্দা।
কেউ করে অনুমান
হিলি বা হাতিবান্ধা।
পতেঙ্গাতে বলে কেউ কেউ
কেউবা বলে নাটোরে।
কেউ কেউ বলে চকোরীয়ায়
কিংবা চিরির বন্দরে।
সে আছে স্বস্থানে
তাঁর প্রিয় প্রান্তরে,
আমি বলি তনু-মনে
মিশে আছে এই অন্তরে!