শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে : চরফ্যাশনে স্পিকার

মোকাম্মেল হক মিলন:  জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, দেশের বড় একটি অংশ হচ্ছে তরুণ প্রজম্ম। সেই তরুণ প্রজম্মই হলো আমাদের মূল শক্তি। যারা আমাদের আগামীতে নেতৃত্বে দিবে। তাই মুজিববর্ষে জাতীর পিতার আদর্শকে বুকে ধারণ করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে যাবে, এটাই হোক আমাদের আজকের দিনের প্রত্যায়।

শনিবার ভোলার চরফ্যাশন সরকারি কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী ও নবীন-প্রবীণ পূর্নমিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ক্ষুধা, দারিদ্র, বৈষম্যমুক্ত ও শোষণমুক্ত একটি সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু তার বাস্তবায়ন কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সারাদেশের উন্নয়ন নিয়ে চিন্তা করেন। সে এলাকায় যা কিছু প্রয়োজন, বিশেষ প্রয়োজনে তিনি সেখানে নজর দিয়ে থাকেন।

জাতীয় সংসদের স্পিকার আরো বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় আজকে অভূতপূর্ব উন্নয়ন এবং ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে প্রত্যান্ত অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাডেমিক ভবন ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। বছরের প্রথমে বিনামূল্যে বই তুলে দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৫ কোটির বেশি বই বিতরণ করা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে সরকার গঠনের পর এ পর্যন্ত ২৯৬ কোটি টাকার অধিক বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। সেটা বিশ্বের আর কোন দেশে নজির নেই।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আরো বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। মেয়েদেরকে শিক্ষার ক্ষেত্রে এগিয়ে আনার জন্য মেধা ও উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। ১ম শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইলফোনের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। সারাদেশে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যারয়কে জাতীয়করণ করা হয়েছে।

চরফ্যাশন একটি গৌরব উজ্জল ইতিহাসের অংশ উল্লেখ করে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আরো বলেন, ১৯৭৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর এখানেই পর্দাপণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ২৩ বছর দীর্ঘ সংগ্রাম-আন্দোলনের মাধ্যদিয়ে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে একটি জাতিকে স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা। সেই জাতির পিতাই তার জীবদ্দশায় স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসার পর খুব বেশি সময় পাননি। সাড়ে ৩ বছরে তিনি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত একটি দেশকে পূর্নগঠনে কাজ শুরু করেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সফর করেছেন। কাজেই যে এলাকাগুলোতে তিনি গিয়েছিলেন সেই এলাকাগুলোতেও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান বিশেষভাবে উদযাপন করা হবে।

তরুণ প্রজম্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী ৫০ বছর পর কেমন বাংলাদেশ হবে সেই বিষয়টি এখনি ভাবতে হবে এবং নিজেদের সেই বাংলাদেশেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সক্ষমতা তৈরি করতে হবে বলেও যোগ করে ড. শিরীন শারমিন। চরফ্যাশনের উন্নয়ন ও পর্যটন শিল্পকে আরো এগিয়ে নিতে পরিবেশবান্ধব টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে হবে। যাতে কোনভাবে পরিবেশ বা পর্যটনের ক্ষতি না হয়।

চরফ্যাশন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কয়ছর আহম্মদ দুলালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন, জাতীয় সংসদের চিপ হুইপ নুর-ই আলম চৌধুরী, যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।

এরআগে বেলুন উড়িয়ে সুবর্ণ জয়ন্তীর শুভ সুচনা করে প্রধান অতিথি। পরে প্রধান ও বিশেষ অতিথিকে সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র নায়ক রিয়াজ, শাকিব খান, মৌসুমী ও পপি পারফর্ম করেন।

 

Print Friendly

Related Posts