বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের ঘাম ঝরিয়ে ম্যাচ হারল জিম্বাবুয়ে। আফসোস থাকতেই পারে সফরকারীদের। সিরিজে সমতা আসতে পারতো। তবে হারেও মানুষের শুভেচ্ছায় ভাসছে শত সমস্যার মধ্যে থাকা দলটি।
দ্বিতীয় ম্যাচেও বড় সংগ্রহ করেছিলো বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের সুবাদে ৩২২ রান করে স্বাগতিকরা। পাহাড় সমান রানের সামনে সফরকারিরা যতোটা ব্যবধানে হারার কথা ছিলো হলো তার উল্টো। জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়েও মাত্র ৪ রানে হার মেনে মাঠ ছাড়তে হলো জিম্বাবুয়ানদের। ক্যারিয়ার সেরা রানের জন্য ম্যাচ সেরার পুরষ্কারও পান তামিম ইকবাল।
৩২৩ রানের বিশাল লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে শুরু থেকেই ধুকতে থাকে জিম্বাবুয়ে। একশ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে তারা। জিম্বাবুয়ের জন্য এত বড় রান তাড়া করা এই মুহূর্তে অসম্ভবের মতোই। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্রুতই ওপেনার রেগিস চাকবাকে হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২ রান করে শফিউল ইসলামের বলে কাভারে লিটন দাসের সহজ ক্যাচ হন জিম্বাবুইয়ান ওপেনার।
তিনাশে কামুনহুমামুইয়ের সঙ্গে দেখে শুনেই ব্যাট করছিলেন ব্রেন্ডন টেলর। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তাদের এই জুটি। মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত এক ফিল্ডিংয়ে রানআউট হয়ে যান টেলর। শফিউলের করা দশম ওভারের তৃতীয় বলটি মিডঅনে ঠেলে দিয়েই রান নিতে গিয়েছিলেন ১১ রান করা টেলর। এক হাতে বল ধরে আরেক হাতের দুর্দান্ত থ্রোতে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন মিরাজ।
এরপর বল হাতে মিরাজ এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন জিম্বাবুয়ের আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শন উইলিয়ামসকে (১৪)। ৬৭ রানে ৩ উইকেট হারায় সফরকারি দল। সেখান থেকে ১০০ পর্যন্ত নির্বিঘ্নেই গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে।
ধীর গতিতে খেলে অর্ধশতক তুলে নেন কামুনহুমামুই। কিন্তু তারপরই যেন দায়িত্ব শেষ মনে করেন জিম্বাবুইয়ান ওপেনার। তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। তারআগে ৭০ বলে ৫১ রান করেন কামুনহুমামুই। তার আউটের পর সিকান্দার রাজা আর অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে ডাক পাওয়া ওয়েসলে মাদেভেরেকে সঙ্গে নিয়ে হারের ব্যবধানটা ছোট করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু ৫৭ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক করার পর মাধেভেরে আউট হলেও একপাশ আগলে রেখে ব্যাট করতে থাকেন রাজা।
কিন্তু ৪২ ওভারের মাথায় টাইগার অধিনায়ক মাশরাফির বলে মাহমুদুল্লাহর বলে ক্যাচবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন রাজা। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৬ রান। এরপর মুতোম্বামি ১৯ রানে আউট হলেও খেলার চাকা ঘুরায় তিরিপানো-মুতোম্বদজি জুটি। তিরিপানোর ২৮ বলে ঝড়ো ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে জিম্বাবুয়ে শিবির। ৫ ছক্কা আর ২ চারে সাজানো ছিলো তার এই ঝড়ো ইনিংস। পরে করলে মুতোম্বদজি ২১ বলে ৩৪ রানে আউট হলেও সজোরে ব্যাট চালাতে থাকেন তিরিপানো। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩১৮ রান করে মাত্র ৪ রানে হারতে হয় সফরকারিদের। বল হাতে ১০ ওভারে ৫২ রান দিয়ে তাইজুল ইসলামের শিকার তিন উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের ১৫৮ রানের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে ভর করে ৮ উইকেটে ৩২২ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। একদিনের ক্রিকেটে ১২তম সেঞ্চুরির সুবাদে ৭ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তামিম।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি করা লিটন দাস আজকের ম্যাচে ভাগ্য বিড়ম্বনায় রান আউটের ফাঁদে পড়ে আউট হলে শান্তর সঙ্গে তামিমের ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন শান্ত। ৬৫ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে ৮৭ রানের জুটি উপহার দেন তামিম-মুশফিক।
মাধেভেরের বলে মুশফিক আউট হলে মাহমুদুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে ১২তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তামিম। আউট হওয়ার আগে ১৩৫ বলে ১৫৮ রানের এক উজ্জল ইনিংস খেলেন তামিম। আর মাহমুদুল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান। এরপর মোহাম্মদ মিথুনের ১৮ বলে ৩২ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহ করতে সহযোগীতা করে। বল হাতে মুম্বা ও টিশুমা নেন দুটি করে উইকেট।