ওয়ালটনের মতো কোম্পানির পুঁজিবাজারে আসা উচিৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক: এমনিতেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট থাকায় নানান উদ্যোগ নিয়েও চাঙ্গা করা যাচ্ছে না পুঁজিবাজার। এর মধ্যে শেয়ার বাজারে পড়েছে করোনা ভাইরাসের থাবা। ফলে, পুঁজিবাজার গিয়ে ঠেকেছে একদম তলানিতে। এই অবস্থা থেকে পুঁজিবাজারকে বের করে আনতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে ধারণা করছেন আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা।

তাদের মতে, শেয়ার বাজার চাঙ্গা করতে সময় কম লাগবে যদি বাজারে ভালো কোম্পানির শেয়ারের সরবরাহ দ্রুত বাড়ানো যায়। এক্ষেত্রে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মতো ভালো ইস্যু পুঁজিবাজারের বর্তমান মন্দা অবস্থা কাটাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, “ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দেশীয় বৃহৎ উৎপাদন কোম্পানি। দেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনে তারা অগ্রপথিক। এ ধরণের উৎপাদনমুখী বৃহৎ কোম্পানি পুঁজিবাজার আসলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। ওয়ালটনের মতো নতুন কোম্পানি শেয়ার বাজার বিনিয়োগকারীদের বৃহৎ অর্থেই উৎসাহ যোগাবে। কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরবে অস্বস্তিকর পূঁজিবাজারে।”

পুঁজিবাজারের উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট কাটানো প্রসঙ্গে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা সবসময় আশ্রয় খোঁজে। আর তাদের সেই আশ্রয়স্থল হলো ভালো কোম্পানির শেয়ার।  বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো শেয়ার অর্থাৎ আশ্রয়ের বড় অভাব রয়েছে। সেক্ষেত্রে ওয়ালটনের মতো ভালো প্রতিষ্ঠান বাজারে আসলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যো আস্থা ফিরে আসার পাশাপাশি পূঁজিবাজার চাঙ্গা হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, ওয়ালটন বড় ও ভালো কোম্পানি। তারা শেয়ার বাজারে আসলে ভালোই হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ওয়ালটনের মতো একটি বৃহৎ কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার সিদ্ধান্ত বাজারের জন্য নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। এ ধরণের কোম্পানি এলে শেয়ার বাজারের উপর জনগনের আস্থা বাড়বে। পুঁজিবাজার চাঙ্গা হবে। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতি তরান্বিত করতে সহায়তা করবে।

উল্লেখ্য, দেশের সাধারণ মানুষকে ওয়ালটনের অগ্রযাত্রার অংশীদার করার উদ্দেশ্য নিয়েই পুঁজিবাজারে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি রোড শো করে ওয়ালটন। এরপর গত জানুয়ারি মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর সভায় কোম্পানির আইপিও বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়। এতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ওয়ালটনের শেয়ারের ‘কাট অব প্রাইস’ নির্ধারিত হয়েছে ৩১৫ টাকা। তবে ওয়ালটন বাজারে আসলে খুব ভালো ডিভিডেন্ড পাওয়া যাবে বলে সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts