যমুনার ভাঙ্গনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ২ শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন

আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদের পাইকশা, মাইঝাইল এলাকায় গত কয়েকদিনে যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে পাইকশা মাইঝাইল বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি যমুনা নদী গর্ভে  বিলীন হয়েছে।
গত দু’দিনে যমুনার পেটে চলে গেছে নবনির্মিত দোতলা বিশিষ্ট পাইকশা মাইঝাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাঙ্গনরোধে এখন পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড বা স্থানীয় প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এলাকার মানুষ শঙ্কিত যদি ভাঙ্গন রোধে দ্রুত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয় তাহলে পার্শ্ববর্তী চৌহালী উপজেলার মত নাগরপুর উপজেলাও এক সময় যমুনা নদীর কড়াল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাবে।
এদিকে নদী ভাঙ্গনে গৃহহারা এলাকার লোকজন আতঙ্ক ও উৎকন্ঠার মধ্যে জীবনযাপন করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী কোন উদ্যোগ না নেয়ায় অব্যাহত ভাঙ্গনে হতাশায় রয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এরই মধ্যে এলাকার লোকজন ভাঙ্গন আতঙ্কে তাদের সহায় সম্বল নিয়ে অন্যত্র সরে যাচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সরঞ্জাম অন্যত্র সরিয়ে নিলেও বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
জানা যায়, গত বছর ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার শাহজানী, আটাপাড়া, মারমা, সলিমাবাদ, পাইকশা, দপ্তিয়রসহ কয়েকটি গ্রামে যমুনা নদীর প্রবল ভাঙ্গন দেখা দেয়। ফলে ওইসব এলাকার ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ  ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
এ বিষয়ে পাইকশা মাইঝাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো.আতিকুর রহমান বলেন, গত বছর বন্যায় এ এলাকায় তীব্র ভাঙ্গন দেখা দেয়। সে সময় যদি ভাঙ্গন রোধে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করা হত তাহলে আজ আমাদের বিদ্যালয়টি যমুনায় বিলীন হয়ে যেত না।
খাসঘুণীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নাগরপুর সরকারি কলেজের সাবেক জিএস শফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকেদিনের প্রবল ভাঙ্গনে এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ প্রায় ২ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
রোববার নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের জানান, ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই ভাঙ্গন রোধে তারা পদক্ষেপ গ্রহন করবেন। এছাড়া যারা ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে তাদের পার্শ্ববর্তী আশ্রয় শিবিরে থাকার পরামর্শ দেন। যেহেতু করোনার প্রভাবে স্কুল বন্ধ তাই ভেঙ্গে যাওয়া বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেজন্য অস্থায়ী বিদ্যালয় নির্মান করা হবে।
Print Friendly, PDF & Email

Related Posts