বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে লেবাননের রাজধানী বৈরুত। ধ্বংসাত্মক বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হাজার হাজার জনতা বৃহস্পতিবার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভে শামিল হন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার শেল নিক্ষেপ করলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেধে যায়।
গত মঙ্গলবারের জোড়া বিস্ফোরণে শহরটির বিশাল এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। পারমাণবিক বোমার মতো শক্তিশালী এ বিস্ফোরণে অন্তত ১৩৭ জন নিহত ও ৫ হাজার আহত হন। খবর বিবিসির।
বৈরুত বন্দরের একটি গুদামে ২০১৩ সাল থেকে মজুত রাখা ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে পুরো একটি জেলা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে হাজারো ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে অসংখ্য মানুষ হতাহত ছাড়াও তিন লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়েছে। শহরটিতে মজুত খাবারের ৮৫ শতাংশ ধ্বংস হয়েছে। যা নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ, আতঙ্ক আর হতাশা।
এত বছর ধরে কীভাবে এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য গুদামটিতে পড়ে ছিল, এমন প্রশ্নে মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিক্ষুব্ধ মানুষ বৈরুতের পার্লামেন্ট ভবনসহ বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভে শামিল হয়। বৈরুতের বিভিন্ন এলাকায় এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায় মানুষকে। তাদের অভিযোগ, সরকারের অবহেলার কারণে এতগুলো মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।
বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ঘেরাও করতে গেলে তাদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।
এদিকে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, বিস্ফোরণের এই ঘটনার তদন্তে ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুই জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারের পাশ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বুধবার মারওয়ান হামাদেহ নামে একজন এমপি পদত্যাগ করেন। পরদিন তাকে অনুসরণ করেন জর্দানে লেবাননের রাষ্ট্রদূত ট্রাসি সামাউন। এমন বিপর্যয়ের ফলে নেতৃত্বের পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলে তাদের দাবি।
বিস্ফোরণের পর পরিস্থিতি দেখতে বৃহস্পতিবার বৈরুত সফরে গেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোন। বিদেশি নেতাদের মধ্যে তিনিই প্রথম বৈরুত সফরে গেলেন। বৈরুতে পৌঁছে বিস্ফোরণস্থলসহ ধ্বংস হয়ে যাওয়া রাস্তাঘাট ঘুরে দেখেন তিনি। আরও অনেক দেশ লেবাননের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে।