বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের এক প্রতিনিধি দল ৭ ডিসেম্বর সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও রংপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টি বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মোঃ মসিউর রহমান রাঙ্গার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং সাক্ষাৎকালে বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দূর্বল দিক ও এর সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য বিস্তারিত আলোচনার সাথে মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা একমত প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা ও প্রদর্শনে তামাকজাত দ্রব্যের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে শিশু-কিশোর ও তরুণরা। সেই সাথে বর্তমানে তরুণরা আরো বেশী আকৃষ্ট হচ্ছে ই-সিগারেট বা এই ধরনের বিভিন্ন ক্ষতিকর পণ্যের প্রতি। যা স্বাস্থ্যের মারাত্বক ক্ষতি সাধনসহ তরুণদের ঠেলে দিচ্ছে নেশাজাতীয় দ্রব্যের দিকে। বিনষ্টের পথে তরুণ ও আগামী প্রজন্ম এবং দেশ হারাচ্ছে আগামি ও বর্তমান কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। তাই তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন প্রয়োজন। বিক্রয়কেন্দ্রে সকল ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন বন্ধ করা, ই-সিগারেট বা এ ধরনের পণ্য বাংলাদেশে উৎপাদন ও বাজারজাত করণ নিষিদ্ধ করা ইত্যাদি আইনের যেসকল দূর্বল দিক রয়েছে সেগুলোর সংশোধন করা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে তামাক ব্যবহারের স্বাস্থ্য ক্ষতি সর্ম্পকে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন।
অপরদিকে তামাক চাষ বন্ধ ও এ ধরনের পেশা পরিবর্তনে সরকারকে বিকল্প র্কমসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে করে তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিপণনে সকলে নিরুসাহিত হয়।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আইনের এই দূর্বল দিকগুলো বাধা হিসেবে কাজ করছে। তাই এখনই সময় জরুরীভিত্তিতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে সকল জনসাধারনের স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিশ্চয়তা প্রদান করা।
তিনি আশ্বাস প্রদান করেন যে সংসদে বা সরাসরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎকালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করবেন।
সম্মানিত সাংসদের সাথে সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের প্রজেক্ট ম্যানেজার, পুষ্টিবিদ ও ডায়েট কনসালটেন্ট মাহ্ফিদা দীনা রুবাইয়া, তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের মিডিয়া ম্যানেজার মোহাম্মদ রুবায়েত এবং সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার শারমিন রহমান, প্রকল্প কর্মকর্তা অদুত রহমান ইমন।
সাক্ষাতকালে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ক তথ্যপত্র ও প্রস্তাবনাসমূহ হস্তান্তর করেন।
প্রস্তাবনাসমূহ ছিল: ক) গণপরিবহন ও রেস্তোঁরাসমূহে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণে এসকল স্থানে স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা ; খ) বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; গ) ই-সিগারেটের মতো ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টসমূহ আমদানি, বাজারাতকরণ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; ঘ) বিড়ি-সিগারেটের সিঙ্গেল স্টিক বা খুচরা শলাকা এবং প্যাকেটবিহীন জর্দা-গুল বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; ঙ) তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’বা সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা; এবং চ) সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধি করে ৫০% থেকে ৯০% এ উন্নিতকরণ এবং প্লেইন প্যাকেজিং প্রবর্তনের জন্য সবধরনের তামাকজাত দ্রব্যের প্রমিত মোড়ক প্রচলন করা প্রভৃতি ।