রিপন শান: ৪ মার্চ ২০২০ তারিখে ঘোষিত হয়েছে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৭। এ পুরস্কারের জন্য পাক্ষিক অনন্যা এবার নির্বাচিত করেছে নন্দিত কথাসাহিত্যিক ঝর্ণা রহমানকে। আগামী ১৬ মার্চ জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পুরস্কার প্রদান করা হবে।
পুরস্কার প্রাপ্তির আনন্দ সংবাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ঝর্ণা রহমান বলেন- পাক্ষিক অনন্যা শুধু একটি পত্রিকাই নয়, অনন্যা একটি সৃজনশীল কর্মোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠান, নারীর মেধা ও প্রতিভা বিকাশের একটি দৃঢ়ভিত মঞ্চ। আর এই প্রতিষ্ঠানটির যিনি কর্ণধার, তাসমিমা হোসেন, তিনি আমাদের দেশের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব, তিনিই প্রকৃত অনন্যা।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর অনন্যা যোগ্যতার ভিত্তিতে একজন নারী লেখককে সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে। এ মনোনায়ন সকলের সমর্থন ও প্রশংসা পায়। বিগত চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালিখির জগতে আছেন ঝর্ণা রহমান। গল্প উপন্যাস কবিতা ও অন্যান্য মিলিয়ে এ পর্যন্ত তাঁর ৫০টিরও বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে।
কবি ও গল্পকার ঝর্ণা রহমান আরো বলেন- পুরস্কারের আশায় কেউ লেখালিখি করেন না, আমিও করিনি। তবে, যখন আমার একটি বইও প্রকাশ পায়নি, তখন আমি নানাভাবে আহসান হাবীব, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সৈয়দ শামসুল হক, রশীদ হায়দার, হুমায়ুন আজাদ, শামসুর রাহমানের মতো বাংলা সাহিত্যের দিকপাল কবিসাহিত্যিকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছি, তাদের কাছে গণ্য হয়েছি, প্রশংসিত হয়েছি। তাঁরা আমার লেখক জীবনে অদৃশ্য পুরস্কার, পরম অনুপ্রেরণা। তারপর কেটে গেছে অনেক বছর। অনেক লিখেছি আমি। একজন লেখকের সব লেখা সবাই পড়বে এমন ভাবাটা বাতুলতা। দশজন মেধাহীন পাঠকের চেয়ে একজন মেধাবী পাঠক আমার কাছে সব সময়ই অগ্রগণ্য। তেমন পাঠকেরও সন্ধান পেয়েছি বহুবার। কিন্তু তারপরেও পুরস্কারের আকাশে আমি অচেনা তারা হয়ে ছিলাম। ২০২১-এ এসে আমার সাহিত্যকর্মকে মূল্যায়ন করে তাসমিমা হোসেন আমাকে অনন্যা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছেন, এ জন্য তাঁকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। ধন্যবাদ জানাই তাঁদের, যাঁরা আমার লেখা পড়ে সেখানে আমার সমাজমনস্কতা, জীবনবোধ, মানবিক বীক্ষণ, ইতিহাস-ঐতিহ্য, কালচেতনা এবং ভাষা ও শিল্পরীতির ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র নান্দনিকতা আবিষ্কার করেছেন।
কথাসাহিত্যিক ঝর্ণা রহমান আরো জানান- অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ঘোষিত হওয়ার পর থেকে ভক্তদের অভিনন্দন আর ভালোবাসা পেয়ে আমি অভিভূত হয়ে পড়েছি। আনন্দে আর আবেগে আপ্লুত হয়েছি। পুরস্কার ঘোষিত হওয়ার সন্ধ্যায়ই তাৎক্ষণিকভাবে অভিনন্দন জ্ঞাপন অনুষ্ঠান করে আমাকে কৃতার্থ করেছে বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব। ইতোমধ্যেই আরও প্রতিষ্ঠান আমাকে সংবর্ধনা জ্ঞাপনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এঁদের সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। করোনা মহামারীর এই বিপর্যস্ত সময়ে এবং মুজিব জন্মশতবর্ষ আর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তির এই পরমোজ্জ্বল সময়ে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার আমার জন্য একটি শক্তিমন্ত্র, একটি আনন্দপ্রদীপ। জয়তু অনন্যা ।