মেট্রো নিউজ, মেহেরপুর : মেহেরপুরের ভৈরব নদ পুনঃখননের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সীমানায় প্রবেশ দ্বার গাংনী উপজেলার কাথুলী থেকে মুজিবনগর উপজেলার রতনপুর পর্যন্ত ভৈরব নদ খনন চলবে। ভৈরবের মেহেরপুর অংশ খননের ফলে এ নদ আবার ফিরে পাবে তার হারানো যৌবন।
মেহেরপুর জেলার প্রধান নদ ভৈরব ক্রমেই বিলিন হয়ে যাচ্ছিল। নাব্যতা সংকটের সুযোগে দু’পাড়ের প্রভাবশালীরা নদীর বেশিরভাগ জমি দখল করে চাষাবাদও শুরু করে। গত দু’যুগ ধরে বর্ষা মৌসুমে কিছুদিন পানির দেখা মিললেও শীতকালে পানির দেখা মিলত না। ফলে জেলার কৃষি জমির বিরাট একটি অংশ সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতো।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও মেহেরপুরসহ চুয়াডাঙ্গা ও যশোর অঞ্চলে মালামাল বহনের একমাত্র পথ ছিল এই ভৈরব। এ অবস্থায় জেলার মানুষের প্রধান দাবির মধ্যে অন্যতম একটি দাবি হয়ে ওঠে ভৈরব পুনঃখনন। ২০১০ সালে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভৈরব পুনঃখননের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সরকার প্রধান। এরই ধারাবাহিকতায় অবশেষে খনন শুরু হলো।
চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ৭০ কোটিরও অধিক টাকা ব্যয়ে ভৈরবের মেহেরপুর অংশের ২৯ কিলোমিটার খনন সম্পন্ন করা হবে। চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল কাজ শুরু হয়েছে। ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর প্রতিষ্ঠান ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়াকার্স লিঃ নারায়নগঞ্জ পুনঃখননের কাজ করছে। শতাধিক আধুনিক খননযন্ত্র দিয়ে মুজিবনগর উপজেলার রতনপুর স্লুইট গেট থেকে খনন কাজ শুরু হয়। নদের প্রায় ২৫ ভাগ খননের পর বর্ষা শুরু হওয়ায় বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। পানি শুকিয়ে গেলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে আবারো খনন শুরু হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯২২ সালের রেকর্ড অনুযায়ী নদীর যে সীমানা ছিল সেই পর্যন্ত খনন করা হচ্ছে। খনন করে নদীর প্রস্থ ৫০ মিটার হচ্ছে। গভীরতা হবে আড়াই থেকে পাঁচ মিটার। উপরে স্লোকসহ ৬৫ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে।
পুনঃ খননের ফলে জেলার প্রধান এই নদটি দখলমুক্তও হচ্ছে । অন্যদিকে সারা বছর জুড়েই পানি থাকার আশা করছেন জেলাবাসী। এতে নৌকাযোগে মালামাল বহন ও পর্যাপ্ত দেশীয় মাছের উৎস সৃষ্টির ব্যাপারে আশাবাদী তারা। তা ছাড়া নদীর দু’পাড়ে বৃক্ষ রোপণ ও বাজার সৃষ্টিসহ উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকা- বাস্তবায়ন হবে। অপরদিকে সেচ সুবিধা পাওয়ায় এ অঞ্চলের ভু-গর্ভস্থ পানির উপরও চাপ কমে আসবে।