নাসির-তামিমার কী হবে ?

ক্রিকেটার নাসির হোসাইনের সঙ্গে বিমানবালা তামিমা সুলতানা তাম্মির বিয়েকে অবৈধ উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই প্রতিবেদনে নাসিরের বিরুদ্ধে অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে যাওয়া, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগ তোলা হয়েছে। এর ফলে নাসির-তামিমার বিয়ের বৈধতা ও পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ কী হতে পারে তা নিয়ে নিজেদের অভিমত তুলে ধরেছেন আইনজীবীরা।

পিবিআই’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মা সুমি আক্তারের সহযোগিতায় মিথ্যা তালাকের নোটিশ তৈরি করে তামিমা সুলতানা। তারা বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পত্র প্রেরণের ভুয়া রিসিট প্রতারণার উদ্দেশ্যে তৈরি করে। সেটি খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করায় এবং পূর্ববর্তী স্বামী (রাকিব হাসান) বলবৎ থাকা অবস্থায় বিবাদী মো. নাসির হোসাইনকে বিবাহ করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। প্রেস কনফারেন্স করে বাদীর মানহানিতে সহযোগিতা করে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নাসির হোসাইনের বিরুদ্ধে বিবাদী তামিমা সুলতানার সঙ্গে বাদীর (রাকিব হাসানের) বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় জেনে বুঝে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, অবৈধ বৈবাহিক সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন, বাদীর স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিজের হেফাজতে রাখা, প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রেস কনফারেন্স করে বাদীর স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী বলে প্রচার করায় বাদীর মানহানি হয়েছে বলে তা অপরাধ।

বাদী রাকিব হাসানের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, অভিযোগের সত্যতা থাকার কারণেই মূলত এ মামলা দায়ের করা হয়। নাসির-তামিমার সম্পর্ক অবৈধ এবং এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধরনের অপরাধে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। আমাদের অভিযোগটি সত্য আকারে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আদালতও তাদের হাজির হতে সমন দিয়েছেন। তাদের নির্ধারিত তারিখে হাজির হয়ে জামিন নিতে হবে।

প্রতিবেদনে পিবিআই জানিয়েছে, তামিমার মা সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পত্র প্রেরণের ভুয়া রিসিট প্রতারণার উদ্দেশ্যে তৈরি করে তা সত্য বলে উপস্থাপন করায় এবং বিবাদী তামিমা সুলতানার বাদীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ, অবৈধ বৈবাহিক সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন, বাদীর স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিজের হেফাজতে রাখা, প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রেস কনফারেন্স করে। বাদীর স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী বলে প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রেস কনফারেন্স করে বাদীর মানহানি ঘটানোয় সেটিও অপরাধ।

ইশরাত হাসান বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর মধ্যে কয়েকটি ধারা জামিনযোগ্য, আবার অজামিনযোগ্য। সেক্ষেত্রে তাদের জামিন হবে কিনা, সেটি আদালত বিবেচনা করবেন। তবে তারা জামিন চাইলে আমরা বিরোধিতা করবো। আমরা মনে করি, যেহেতু বিষয়টি তদন্ত হয়ে এসেছে এবং আদালত অপরাধ আমলে নিয়েছেন। তাই আমরা মনে করি, এই অপরাধে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মহসীন কবীর বলেন, এ ধরনের অপরাধ সমাজে বেড়েই চলছে। পরকীয়ার কারণে সংসার ভেঙে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী হচ্ছে শিশুরা। শিশুরা যেন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হয়ে মানসিক আঘাত না পায় সেদিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। তাই পরকীয়া, ব্যভিচারের মতো অপরাধের জন্য নারী-পুরুষ উভয়েরই সুষ্ঠু বিচার হওয়া আবশ্যক।

Print Friendly

Related Posts