২০২১ সালে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন তাঞ্জানিয়ার লেখক আব্দুলরাজ্জাক গুরনাহ।
সুইডিশ অ্যাকাডেমি বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটায় পুরস্কার জয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে।
নোবেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ঔপনিবেশিকতার প্রভাব নিয়ে আপসহীন ও সহানুভূতিশীল লেখনির জন্য আব্দুল রাজাক গুরনাহকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি ও মহাদেশগুলোর শরণার্থীদের ভাগ্য নিয়েও লিখেছেন তিনি।
তানজানিয়ার জানজিবায় ১৯৬৮ সালে জন্ম নেওয়া আব্দুল রাজাক গুরনাহ যুক্তরাজ্যে সাহিত্য চর্চা করছেন। ভারত মহাসাগরের জানজিবার দ্বীপে তার বেড়ে ওঠা। তিনি ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে শরণার্থী হয়ে ইংল্যান্ডে যান। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত উপন্যাস প্যারাডাইসের জন্য তাকে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
সুইডিশ একাডেমি বলছে, ঔপনিবেশিকতার প্রভাব নিয়ে তার আপসহীন ও সহানুভূতিশীল লেখনির জন্য তাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশেষ করে শরণার্থীদের জীবন ও সেখানে তাদের সাংস্কৃতিক সংকট নিয়ে লিখেছেন।
নোবেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আফ্রিকার উপসাগরীয় অঞ্চলের শরণার্থীদের বিড়ম্বনা এবং বিভিন্ন মহাদেশের বিবিধ সংস্কৃতি ও ঔপনিবেশিকতার প্রভাবকে আপসহীন গভীর মানবিক অন্তর্দৃষ্টিতে তুলে এনেছেন তিনি।
এ পর্যন্ত ১০টি উপন্যাস লিখেছেন এই লেখক। তার বিখ্যাত কয়েকটি উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে—মেমোরি অব ডিপার্চার (১৯৮৭), প্যারাডাইস (১৯৯৪), বাই দ্য সি (২০০১) ও ডেজারশন (২০০৫)। এছাড়াও তিনটি ছোটগল্পের বই এবং প্রবন্ধ রয়েছে তার।
এর আগে ২০২০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান যুক্তরাষ্ট্রের কবি লুইস গ্লুক। সরল ও সৌন্দর্যময় সুস্পষ্ট কাব্যিক কণ্ঠস্বরের জন্য তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
চলতি বছর ৪ অক্টোবর চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণার মাধ্যমে ২০২১ সালের নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। তাপমাত্রা ও স্পর্শের রিসেপ্টর আবিষ্কারের জন্য এবার চিকিৎসা বিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেভিড জুলিয়াস এবং লেবাননের আর্ডেম প্যাটাপৌসিয়ান।
৫ অক্টোবর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান জাপান, জার্মানি ও ইতালির তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন- আবহাওয়াবিদ সিউকুরো মানাবে, পদার্থবিদ ক্লাউস হাসল্মান্ এবং সমুদ্রবিজ্ঞানী জর্জিও পারিসি। বৈশ্বিক উষ্ণতার পূর্বাভাস দেওয়া এবং কমপ্লেক্স ফিজিক্যাল সিস্টেম সম্পর্কে বোঝাপড়ার বিষয়ে যুগান্তকারী অবদানের জন্য তাদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
৬ অক্টোবর জৈব-অনুঘটন বিক্রিয়া আবিষ্কারের জন্য রসায়নে নোবেল পান জার্মানির বেনিয়ামিন লিস্ট ও যুক্তরাজ্যের ডেভিড ডব্লিউ সি ম্যাকমিলান।
আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে আলফ্রেড নোবেলের উইলের মাধ্যমে এ পুরস্কারের প্রবর্তন হয়। তার রেখে যাওয়া তিন কোটি সুইডিশ ক্রোনার দিয়েই শুরু হয় পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া। পরবর্তীকালে ১৯৬৮ সালে এই তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি। তবে পুরস্কার ঘোষণার আগেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন আলফ্রেড নোবেল। নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা একটি স্বর্ণপদক এবং এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার (১ কোটি ১৪ লাখ ডলার) অর্থ পেয়ে থাকেন।