কবি ফররুখ আহমদ এর ৪৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

জ.ই বু্লবুল : পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি, ক্ষুধা দারিদ্র বৈষম্য থেকে রক্ষা ও ভাষা শিক্ষায় সমৃদ্ধ একটি জাতি গড়ার সুদীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে কজন কবি লিখনীর মাধ্যমে বাংলার ঐতিহাস ঐতিহ্যকে বিশ্বে তুলে ধরেছেন- প্রগতির কবি ফররুখ আহমদ তাদেরই একজন।

১৯ অক্টোবর ছিল এই কবির ৪৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৪ সালের এইদিনে ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।

সাম্য ও মানবতার কবি ফররুখ আহমদ এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) কবি ফররুখ আহমদ স্মৃতি পাঠাগার এর উদ্যোগে স্মরণ সভা ও দোয়া মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের সাবেক বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী।

প্রধান আলোচক ছিলেন নজরুল গবেষক কবি আবদুল হাই শিকদার। উদ্বোধন করেন সাংবাদিক কবি ও ছড়াকার আবু সালেহ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি ও গীতিকার কে জি মোস্তফা, সাংবাদিক ও কবি হালিম আজাদ, কবি হাসান আলিম, ইতিহাসবিদ ও গবেষক মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম।

অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ও কবি হাসান হাফিজ, কবি জাকির আবু জাফর, কবি ও লেখক ড.ফজলুল হক তুহিন, লেখক ও আবৃত্তি শিল্পী শিমুল পারভীন, প্রাবন্ধিক ও গবেষক জসিম উদ্দিন, সংগীত শিল্পী তাওহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

সভাপতিত্ব করেন কবি পাঠাগারের সভাপতি সৈয়দ রিপন আহমেদ। সঞ্চালনা করেন কবি আবিদ আজম ও অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহবায়ক খোন্দকার আব্দুল মান্নান।

কবি ফররুখ আহমদ ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জুন বর্তমান মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাঝআইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পুলিশ ইন্সপেক্টর খান সাহেব সৈয়দ হাতেম আলী এবং বেগম রওশন আরার দ্বিতীয় পুত্র ফররুখ।

স্কুলজীবনেই তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। কবি গোলাম মোস্তফা, অধ্যাপক আবুল ফজল ও কবি আবুল হাশেমের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিরা তার শিক্ষক ছিলেন।

কবি ফররুখ আহমদের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে : সাত সাগরের মাঝি, সিরাজাম মুনিরা, নৌফেল ও হাতেম, মুহূর্তের কবিতা, হাতেম তায়ী, তাজী, পাখীর বাসা, হরফের ছড়া, নতুন লেখা, ছড়ার আসর, ফররুখ আহমদের শ্রেষ্ঠ কবিতা, হে বন্য সুন্দরেরা, নয়া জামাত, ইকবালের নির্বাচিত কবিতা, চিড়িয়াখানা, কাফেলা, হাবেদা মরুর কাহিনী, সিন্দবাদ, দিলরুবা, ফুলের জলসা, সাঁঝ সকালের কিস্সা, কিস্সা কাহিনী, ছড়ার আসর, আলোক লতা, খুশীর ছড়া, ছড়া ছবির দেশে, মজার ছড়া, পাখীর ছড়া, রং মহল, অনুস্সর বিসর্গ, ঐতিহাসিক অনৈতিহাসিক, হালকা লেখা, তাসবির নামা, মাছরাঙ্গা, রাজরাজড়া, কাব্যগীতি, রক্ত গোলাব, মাহফিল, কোরআন মঞ্জুষা প্রভৃতি।

সাহিত্য ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কবি ফররুখ আহমদ বাংলা একাডেমি পদক (১৯৬০), প্রাইড অব পারফরমেন্স প্রেসিডেন্ট পদক (১৯৬১), আদমজী পুরস্কার (১৯৬৬), ইউনেসকো পুরস্কার (১৯৬৬), একুশে পদক (মরণোত্তর, ১৯৭৭), স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর, ১৯৮০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন পদকে (মরণোত্তর, ১৯৮৪) ভূষিত হয়েছেন।

ফররুখ আহমদ ১৯৪৩ সালের মহাদুর্ভিক্ষের ওপর রচিত ‘লাশ’ কবিতার জন্য বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছিলেন।

Print Friendly

Related Posts