বাড়ীতে ঢোকার রাস্তায় বাঁশের বেড়ায় গৃহবন্দি ৩ পরিবার, ৯৯৯তে ফোন

মো. রাসেল হোসেন, ধামরাই: ঢাকার ধামরাইয়ে উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সাইদপাড়া গ্রামের ৩ পরিবারের চলাচলের রাস্তা বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে চলাচলের রাস্তা, টয়লেট, গোসলখানা বন্ধ করে হয়ে গেছে। গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে ৩ পরিবার। ৯৯৯ ফোন দিয়েও অবিরুদ্ধ থেকে মুক্ত হয়নি ৩ পরিবার।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সাইদপাড়া এলাকায় সরজমিনে গেলে দেখা যায় রাস্তার মধ্যে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়ার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে দাঙ্গার আশংকা দেখা দিয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসির।

এলাকাবাসি জানায়, উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সাইদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আ. খালেক বেপারীর পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে, তাদের মধ্যে দুই ছেলে মোখলেছুর রহমান মোখছেদ, হাবিবুর রহমান ও মেয়ে মরিয়মকে বাড়ির জমি লিখে দেয় বাবা। বাকী তিন ছেলে মোশাররফ হোসেন, খোরশেদ আলম ও খোকন হোসেনকে জমি না দেওয়ায় তাদের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। এই বাড়ি দুই ভাই বোনকে লিখে দেয়ার পর গ্রামের মাতব্বর মিমাংসা করার জন্য এক জায়গায় বসেছিলো তারা কোন পক্ষ মিমাংসা না করে উল্টো মারামারি করে।এখন মোখলেছের লোকজন নিজের জমি দাবি করে খোরশেদ আলমের বাড়ির চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।

এব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিরিন আক্তার উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সাইদপাড়া গ্রামের প্রবাসি খোকন হোসেনের স্ত্রী ও তার দুই ভাসুর খোরশেদ আলম, মোশাররফ হোসেন।

অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সাইদপাড়া গ্রামের আ. খালেখ বেপারীর ছেলে মোখলেছুর রহমান মোখছেদ (৫২), মোখলেছুর রহমানের তিন ছেলে, মেহেদী হাসান(২৮), সজীব (২৫), রিফাত (১৮), স্ত্রী শেফালী বেগম(৪৮), প্রবাসি হাবিবুর রহমানের স্ত্রী মোমেনা আক্তার (৪০)।

এই বিষয়ে প্রবাসী খোকন হোসেনের স্ত্রী শিরিন আক্তার বলেন, আমার স্বামী বিদেশে থাকার কারণে আমার শ্বশুরের কাছ থেকে আমার স্বামীর বড় ভাই মোঃ মোখলেছ ও হাবিবুর রহমান শ্বশুরকে ভুল বুঝিয়ে বাড়ীর জায়গা তাদের নামে লিখে নিয়েছে। এ বাড়ির জমি নিয়ে মোখলেছুর রহমান মোখছেদ এর নামে মামলা করি, সেই মামলা তুলে নেওয়া জন্য চাপ দেন বিবাদীরা, মামলা তুলে না নেয়ায় হত্যা হুমকির দেন তারা। পরে সাধারণ ডায়রি করলে ২ জানুয়ারি পুলিশ তদন্তে আসে। বাড়িতে পুলিশ আশার কারণে আমাদের বাড়িতে আশার রাস্তা বন্ধ করে দেয় মোখলেছুর। তারা আমাদের বাড়ীর সামনে বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। আমি ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ এসে তাদেরকে বাঁশের বেড়া খুলে দিবে বলেছে। তারপরও এখনো বাঁশের বেড়া খুলে দেয়নি। এঅবস্থায় আমি খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছি।

ভুক্তভোগী খোরশেদ আলমও দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন। বলেন, তারা দুইভাই মিলে আজ আমাদের বাড়ীর ও ঘরের সামনে বাশঁ দিয়ে বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমরা বাধা দিতে গেলে তারাসহ কিছু সন্ত্রাসী লোকজন দিয়ে আমাদের মারতে আসে। আমরা ভয়ে বাড়ী থেকে বেরুতে পারি না। এর আগে আমাকে সবাই মিলে মারধর করে।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ মোখলেছুর রহমান মোখছেদ বলেন, আমার মা-বাবাকে ভাত কাপড় না দেয়ায় আমাকে, ছোট ভাই হাবিবুর ও বোন মরিয়মকে বাবা জমি লিখে দিয়েছে। কিন্তু আমরা জালিয়াতি করে জমি লিখে নিয়েছি কথাটি মিথ্যা এছাড়াও এক বছর আগে আমার নামে নারী ও শিশু আইনে মিথ্যা মামলা করে।

এবিষয় ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) একেএম সাইদুজ্জামান বলেন, ৯৯৯ আমার কাছে কল আসে ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের সাইদপাড়া এলাকায় এক মহিলাকে ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তাকে ঘরবন্দি করে রাখা হয়নি, তাদের বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়েছে। তাদের বাড়ির জমি সংক্রান্ত ঝামেলা রয়েছে।

Print Friendly

Related Posts