মোকাম্মেল হক মিলন, ভোলা থেকে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলাম ধর্মের প্রাসারে দেশে প্রতিটি জেলা শহরসহ উপজেলা শহরের একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণ করে যাচ্ছেন। দেশের প্রতিটি উপজেলায় ও জেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মান করা হবে এ সরকার আমলেই। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেছেন। তার মধ্যে ভোলা সদর উপজেলার ব্যাংকের হাট এলাকায় মডেল মসজিদের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ায় তা প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ধাপে উদ্বোধন হয়েছে।
তারই আলোকে ভোলা জেলার সাতটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও জেলা শহরে অত্যাধুনিক মসজিদ নির্মাণ কার্যক্রম চলছে পুরোদমে। ইতিমধ্যে ভোলা জেলা শহরের মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেছেন সাবেক মন্ত্রী ও ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ।
ভোলা জেলায় আটটি মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রায় একশত চার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে ভোলা গনপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অব্যাহত রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মসজিদের পাশাপাশি, মন্দির, গির্জাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে বরাদ্দ দিয়ে চলেছেন।
ভোলা জেলা সাতটি উপজেলায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভোলা সদরের ব্যাংকের হাট এলাকায় ১১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা ৫৪ হাজার টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন একটি মডেল মসজিদ নির্মাণ করে গত বছর উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বধনের পরে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদ উদ্দিন এমপি ভোলায় উক্ত মসজিদে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সভায় অংশগ্রহনে করেন। এছাড়াও ইসলামি ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন মজুমদারসহ একটি টিম পরিদর্শন করে গেছেন।
অপরদিকে, দৌলতখান উপজেলার ১৩ কোটি ১৯ লক্ষ ৫১ হাজার টাকায় ব্যয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে। এর ৪৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ১২ কোটি ২১ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে। তার ৫৩ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। লালমোহন উপজেলায় ১২ কোটি ১২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা ব্যায়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। তজুমদ্দিন উপজেলায় ১২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে। এই মসজিদে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা রয়েছে। চরফ্যাশন উপজেলায় ১৩ কোটি ৫১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে এর ৪৪ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে এবং মনপুরা উপজেলায় ১৩ কোটি ৫৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ২০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
ভোলা সদর উপজেলা মডেল মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি আলহাজ্জ তাজল ইসলাম মাস্টার বলেন, এই মসজিদটি অত্যান্ত সুন্দর ও দর্শনীয়। নানাবিদ সুবিধা সমৃদ্ধ এই মসজিদটিতে সকল বয়সী মুসলমানদের জন্য অত্যান্ত সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এমন মসজিদ নির্মান করে ইসলাম প্রসারে দৃস্ট্রান্ত স্থাপন করেছেন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি মহোদয়কে ভোলার জনবহুল ভেদুরিয়া ইউনিয়নে মসজিদটি নির্মানের জন্য জায়গা নির্ধারনে।
ভোলা জজ কোর্টের চাকুরিজীবি সাইফুল বাবুল বলেন, এমন একটি মসজিদ এই যুগে অনন্য দৃস্ট্রান্ত। ইসলাম জাগরনে মাইলফলক হয়ে থাকবে। ভোলার তালুকদার ভবনের ব্যাবসায়ী মাহাবুব আলম বলেন, আমরা ব্যাবসায়ীরা শুক্রবার একটু সময় পাই। মনের প্রশান্তির জন্য আমরা মাঝে মাঝে একটু ঘুরতে বের হই। সেই সুবাধে ভেদুরিয়া ইউনিয়নে গেলে মনের টানে মডেল মসজিদে একটু নামাজ আদায় করেছি। মনটা শান্তি হয়েছে নামাজ আদায় করে। আমাদের যুব সমাজের এমন একটা দাবি ছিলো তা বাস্তবায়ন হয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী সরোয়ার আলম জানান, মসজিদের কাজ টেকসই ও আধুনিক ভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। একই সাথে মসজিদ ভবনে নামাজ আদায়, গণশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অফিস ও ইসলামি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। উল্লেখ্যে, সাতটি উপজেলার মডেল নির্মাণ কার্যক্রম চললেও ভোলা জেলা শহরের আধুনিক মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজটি একটু দেরিতে শুরু করা হয়। গত বছর সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ তোফায়েল আহমেদ মসজিদ নির্মান কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে ছিলেন। এই মসজিদটির পিছনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ০৭ লক্ষ টাকা। প্রায় ৮১ শতাংশ জমির ওপর এই দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাটি নির্মাণ করা হবে।
ভোলা জেলা ইসলামি ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোঃ হুমায়ূন কবির জানান, ভোলা জেলার সাত উপজেলায় ৫ হাজার ৬৭৬টি মসজিদ রয়েছে। তারপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্তাই ইচ্ছায় দেশের প্রতিটি উপজেলায় ও জেলা শহরে অত্যাধুনিক এই দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলো নির্মাণ করায় তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি এবং ইসলামিক কার্যক্রমে গতি আরো বৃদ্ধি পাবে এই মসজিদগুলোর মাধ্যমে।