এরশাদ শিকদারের মেয়ের আত্মহননের নেপথ্যে

রাজধানীর গুলশানের সুবাস্তু টাওয়ারে গত শুক্রবার (মার্চ ৪) ভোরে নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন এশা। এ ঘটনায় এশার মা সানজিদা নাহার প্রেমিক প্লাবন ঘোষের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

প্লাবন ঘোষ (২৮) নামের এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল এরশাদ শিকদারের মেয়ে জান্নাতুল নওরিন এশার (২২)। মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরের ছেলে প্লাবন প্রথমে ধর্ম পরিবর্তন এশাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে ধর্মের কারণেই কথা রাখতে পারবেন না বলে বিয়ের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া শুরু করেন প্রেমিক। এভাবেই প্লাবন ধীরে ধীরে এশাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেন।

এমনই দাবি করছেন এশার পরিবার। প্রেমিকের প্ররোচনাতেই আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এশার পরিবারের পক্ষ থেকে।

মামলার এজাহারে সানজিদা নাহার অভিযোগ করেন, ‘এশাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন প্রেমিক প্লাবন’।

এজাহারে সানজিদা নাহার বলেন, প্লাবন ঘোষের সঙ্গে এশার দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্লাবন সনাতন ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম হয়ে এশাকে বিয়ে করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। এশা মাঝে মধ্যে প্লাবনের সঙ্গে ঘুরতে যেতেন।

মামলার অভিযোগনামায় এশার মা আরো বলেন, বৃহস্পতিবার (মার্চ ৩) রাত নয়টার দিকে প্রেমিকের (প্লাবন) সঙ্গে দেখা করতে বাসা থেকে বের হয় জান্নাতুল। পরে জান্নাতুলকে বাসার নিচে নামিয়ে দিয়ে যায় প্লাবন। এ সময় দু’জনের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। বাসায় ফিরে জান্নাতুল নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। সকালে মেয়ের ঘরের দরজায় ধাক্কা দিয়ে সাড়া পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরে নিরাপত্তাকর্মীর সহযোগিতায় দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচনো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় জান্নাতুলকে।

জান্নাতুলকে উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জান্নাতুলের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

এজাহারে এশার মা আরও অভিযোগ করে বলেন, তারা ভিন্ন ধর্মের হওয়ায় বিয়ের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চেয়েছিল প্লাবন ঘোষ। এজন্য সে কৌশলে এশার সঙ্গে ঝগড়া বাধায় এবং ইচ্ছে করেই এশাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে। প্লাবন এশাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে।

এদিকে জানা যায়, প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়ার পর আত্মহত্যা করেন এরশাদ শিকদারের মেয়ে জান্নাতুল নওরিন এশা। ২২ বছর বয়সী এই তরুণী শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকে বেশ জনপ্রিয়।

জান্নাতুল উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর আর কলেজে ভর্তি হননি। ঠিক কী কারণে আর পড়াশোনা করেননি তা জানা যায়নি। তবে সূত্র জানিয়েছে, গুলশানের সুবাস্তু টাওয়ারের নবম তলার একটি বাসায় মায়ের সঙ্গেই থাকতেন এশা। তার সময় কাটতো টিকটক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই। প্রায়ই নতুন বন্ধু-বান্ধব দেখা যেত তার সঙ্গে।

জান্নাতুল নওরিন এশার মায়ের নাম সানজিদা নাহার। তিনি এরশাদ শিকদারের দ্বিতীয় স্ত্রী। ২০০৪ সালে খুলনায় হত্যা মামলায় সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts