নেপালের কাঠমুন্ডুতে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনার চার বছরপূর্তি আজ। ২০১৮ সালের ১২ মার্চ ভয়াবহ ওই বিমান দুর্ঘটনায় ৫১ জন যাত্রী ও ক্রু প্রাণ হারান।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন সিলেটের জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজের ১২ বিদেশি শিক্ষার্থী। তাদের জন্য এখনো অশ্রুজলে বুক ভাসান সহপাঠি ও শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
এসব শিক্ষার্থীরা হলেন- সঞ্জয় পৌডেল, সঞ্জয়া মহারজন, নেগা মহারজন, অঞ্জলি শ্রেষ্ঠ, পূর্নিমা লোহানি, শ্রেতা থাপা, মিলি মহারজন, শর্মা শ্রেষ্ঠ, আলজিরা বারাল, চুরু বারাল, শামিরা বেনজারখার, আশ্রা শখিয়া ও প্রিঞ্চি ধনি।
সিলেটের রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজে তাদের শিক্ষা জীবন ছিলো একেবারেই শেষ পর্যায়ে। তারা ছিলেন এমবিবিএস পরীক্ষার ফলপ্রার্থী। কথা ছিলো ফল বের হওয়ার পর দেশে চলে যাবেন। দেশের মানুষের চিকিৎসা সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করবেন। তবে সে আশা আর পুরণ হয়নি তাদের। নিজ দেশের মাটিতে পৌঁঁছেই বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্যদের সাথে প্রাণ হারান এই ১২ শিক্ষার্থী।
তাদের মর্মান্তিক মৃত্যুর দিনটিকে মনে করে এখনো স্মৃতিকাতর হন সহপাঠিরা। শিক্ষকরাও তাদের মনে করেন।
নিহতদের সহপাঠি ১৯তম ব্যাচের ডা. ফয়েজ আহমদ বলেন, এখনো যেন চোখের সামনে ভেসে উঠছে সেই সুন্দর মুখগুলো। তারা যখন এমবিবিএস পরীক্ষা ও ইন্টার্নশিপ শেষ করে দেশে ফিরছিলো, একে একে সবার কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিলো তারা। সে দিন আমরা সহপাঠিরাও তাদের বিদায় দিতে উপস্থিত ছিলাম। কথা ছিলো তারা আবার ক্যাম্পাসে আসবে। কিন্তু নিয়তি তাদেরকে আমাদের কাছ থেকে অনেক দূরে নিয়ে গেছে। কখনো কল্পনাও করতে পারিনা তারা আর আসবে না।
অন্য সহপাঠি ডা. আরিশ বলেন, বিদেশি হয়েও কত সহজে ওরা আমাদের সাথে মিশে গিয়েছিলো। অনেকেই বাংলা ভাষা আয়ত্ব করে নিয়েছিলো। মাঝে মাঝে মনো হতো ওরা বাঙালী। ওরা কঠিন বিষয়টিও সহজ করে নিতো। আজকের এই দিনে আমাদের প্রয়াত বন্ধুদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।
জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবেদ হোসেন বলেন, তারা ছিল আমার সন্তানের মতো। ছাত্র হিসেবেও অনেক মেধাবী ও বিনয়ী ছিলো। একসঙ্গে এতোগুলো মুখ আড়াল হয়ে যাবে বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়। তাদের হাসিমাখা মুখগুলো কখনো ভুলতে পারবো না। তারা যেখানে থাকে, তারা যেন ভালো থাকে এই কামনা করি।