চট্টগ্রামে হাসপাতালের বেডে বিয়ে হওয়া ক্যান্সারে আক্রান্ত ফাহমিদা কামাল (২৬) মারা গেছেন।
সোমবার (২১ মার্চ) সকালে চট্টগ্রামের দক্ষিণ বাকলিয়ার নিজ বাসায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ফাহমিদা কামালের নিকট আত্মীয় সাইফুদ্দিন সাকি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৯ মার্চ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে বেডে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় দীর্ঘদিনের ভালোবাসার মানুষ মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ফাহমিদার। মৃত্যু পথযাত্রীর এমন বিয়ের ঘটনা বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ফাহমিদা কামাল চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠিত পরিবার ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন ও শিউলি আকতারের মেয়ে। ফাহমিদার আরো দুই বোন এবং এক ভাই রয়েছে। বড় বোন থাকেন চীনে। ছোট ভাই চট্টগ্রামে বিবিএ অধ্যয়নরত।
সাইফুদ্দিন সাকি জানান, চট্টগ্রামের আইইউবি থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেন ফাহমিদা। আর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন মাহমুদুল হাসান। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়েই মাহমুদুল হাসান এবং ফাহমিদা কামালের পরিচয় এবং এক পর্যায়ে তাদের সম্পর্ক গভীর প্রেমে গড়ায়। গত বছরের জানুয়ারী মাসে ফাহমিদার রেক্টাম ক্যান্সার শনাক্ত হয়। ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর গত এক বছর ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসা চলে ফাহমিদার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফাহমিদার সুস্থ হয়ে ফেরার আশা ছেড়ে দেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি তাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিনের চিকিৎসা প্রক্রিয়াতেও আশাহত ছিলেন না প্রেমিক মাহমুদুল হাসান। সবসময় ছিলেন প্রিয়তমার পাশে।
সর্বশেষ গত ৯ মার্চ রাতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টারের হাসপাতালের বেডে লাল বেনারসি পড়িয়ে ফাহমিদাকে বিয়ে করেন প্রেমিক মাহমুদুল হাসান। হাসপাতালের বেডেই আংটি পড়িয়ে দীর্ঘদিনের প্রেমিকাকে আপন করে নেন মাহমুদুল হাসান। এই সময় কাটা হয় কেক, বিতরণ করা হয় খেজুর ও মিষ্টান্ন। মৃত্যুকে সামনে রেখেও মুক্তা ঝরানো হাসি ফোটে ফাহমিদার ঠোঁটে। কিন্তু চোখে অশ্রু দেখা যায় উপস্থিত স্বজনদের মধ্যে। এই বিয়ের মাত্র ১১ দিন পরই মারা গেলেন ফাহমিদা কামাল।