মনিরুল ইসলাম, ভোলা : ভোলায় সূর্যমুখীর বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে শতাধিক কৃষকের মাঝে। অনেকেই প্রথম বারের মত এর আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন। তেলজাতীয় অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখীর চাষ অনেক সহজলভ্য ও উৎপাদন খরচ কম থাকায় তারা আরো বেশি উৎসাহিত হয়ে উঠেছেন। সূর্যমুখীর চাষে কৃষকদের ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
সূর্যমুখীর উৎপাদিত তেল জেলার চাহিদা মিটিয়ে অনান্য জেলায় সরবরাহ সম্ভব বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
স্থানীয় চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন ও চরফ্যাশনের বিস্তীর্ন ফসলের ক্ষেতে এখন সূর্যমুখীর সমারোহ।
মাটি ও আবহাওয়ায় অনুকুলে থাকায় এ মৌসুমে বাম্পার ফলন হয়েছে সূর্যমুখীর । এতে কাঙ্খিত পরিমান ফলন হওয়ায় চাষীরা ফসল ঘরে তুলছেন। বাজার দাম বেশি হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।
সদরের রতনপুর এলাকার জালাল ৩২ শতাংশ, সাদের পাটোয়ারী, ২৮ শতাংশ, ছিদ্দিক ৩০ শতাংশ ও হাদিস ২৪ শতাংশ জমিতে প্রথম বারের সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। তারা জানান, বিনা মূল্যে বীজ পেয়ে সূর্যমুখীর চাষ করে সফলতা পেয়েছি, উৎপাদন অনকে ভালো হয়েছে।
বোরহানউদ্দিনের লক্ষীপুর গ্রামের চাষী অহিদ সর্দার বলেন, তার ৩২ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষবাদে ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদনও অনেক ভালো হয়েছে। গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা থেকে আমরা বিনামূল্যে প্রশিক্ষন ও বীজ পেয়ে চাষাবাদ শুরু করে ভালো ফলন পেয়েছি, কৃষি অফিসও আমাদের সূর্যমুখী চাষে উৎসাহিত করেছে।
একই গ্রামের দুলাল ২৮ শতাংশ ও কালু ২৫ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তারা বলেন, অন্য সফলের তুলনায় সূর্যমুখীর উৎপাদন অনেক সহজ। পোকা-মাকড়ের কোন আক্রমন নেই। তা ছাড়া বাজারেও সূর্যমুখীর চাহিদা রয়েছে, দাম অনেক ভালো। বর্তমানে মন প্রতি ১৫ থেকে ১৫শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, সিসা-ইরির সহযোগীতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ‘গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা’ জেলার চারটি উপজেলার শতাধিক কৃষকদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষন ও বীজ বিতরন করে সূর্যমুখী চাষে উৎসাহিত করে। তাদের কাছ থেকে সহযোগীতা পেয়ে সফলতা পেয়েছে কৃষকরা।
জেলা কৃষি অফিস জানায়, ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সূর্যমুখী আবাদ ও তোলার মৌসুম। এ মৌসুমে জেলার চারটি উপজেলার ৮ হেক্টর জমিতে দেশী ও হাইব্রিড প্রজাতির সূর্যমুখীর চাষাবাদ হয়।