মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় পাহাড়

বান্দরবান পার্বত্য জেলার মারমা সম্প্রদায় তাদের নব বর্ষবরণ উৎসব ‘সাংগ্রাই’ উদযাপনের সব ধরণের প্রস্তুতি শেষ করেছে। জেলার ৭টি উপজেলায় মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবে মেতে ওঠার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উৎসব উদযাপন কমিটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৩ এপ্রিল সকালে বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায় স্থানীয় রাজার মাঠ থেকে এক শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান ‘সাংগ্রাই’ উদযাপন শুরু করবে। শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথি থাকবেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং এমপি। এ সময় আদিবাসী তরুণ-তরুণীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে বর্ণিল সাজে শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। নববর্ষকে বিদায় ও আমন্ত্রণ জানিয়ে আদিবাসী ভাষায় রচিত গানের তালে শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইনিস্টিটিউটে এসে শেষ হবে।

বান্দরবান সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শৈটিং ওয়াই বলেন, এবছর ১৩ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাংগ্রাই উৎসব পালন হবে। ১৩ তারিখ সকাল ৮টায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে এর সূচনা করা হবে। পরে ১৪ তারিখ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণে মিনি ম্যারাথন দৌড়, ১৫ এপ্রিল আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শহরের সাঙ্গু নদীর তীরে মৈত্রী পানি বর্ষণ এবং খেলাধুলা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের এ উৎসবের সমাপ্তি করা হবে।

প্রসঙ্গত, পানি বর্ষণ উৎসবের সময় তরুণ-তরুণীরা নির্ধারিত মঞ্চে অবস্থান করে। তরুণীদের সামনে বিভিন্ন পাত্রে বা জলাধারে জল রাখা থাকে। ঐ সময় তরুণেরা জলভর্তি পাত্র নিয়ে দলে দলে এসে সাংগ্রাইংতে মিলে মিশে পানি খেলায় মেতে ওঠে। একেকজন তরুণ একজন তরুণীর দেহে জল ছিটায়। আর ঐ তরুণীও ঐ তরুণের দেহে পাল্টা জল ছিটিয়ে তার প্রতি উত্তর দেয়। এভাবে তরুণ-তরুণীদের পানি ছিটানোর মধ্য দিয়ে মৈত্রী পানি বর্ষণ উদযাপন করে।

বান্দরবান শহরের বাসিন্দা মেসাইংউ মার্মা বলেন, করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর সাংগ্রাই উৎসবে আনন্দ করতে পারিনি, এই বছর খুব আনন্দ করবো আমরা।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা বলেন, পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায় যে নামেই বর্ষবরণ করেনা কেন, দেশ ও দশের কল্যাণে আমরা প্রার্থণার মধ্যে দিয়ে নববর্ষকে বরণ করি।

পাহাড়ের চাকমা সম্প্রদায় এই উৎসবকে বিজু, মারমা’রা সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরারা বৈসু বা বৈসুক বলে। ত্রিপুরাদের বৈসুর (বৈ), মারমাদের সাংগ্রাইয়ের (সা) চাকমাদের বিজুর (বি) মিলিয়ে একে বৈসাবি উৎসব নামেও অভিহিত করা হয়।

Print Friendly

Related Posts