পহেলা বৈশাখে ঝড়-বজ্রপাতে ৮ জনের মৃত্যু

বৈশাখ মাসের প্রথম দিন আনন্দ-উৎসবের বদলে সিলেট বিভাগের দুই জেলায় তা কান্নায় রূপ নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ৪টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে ঝড় ও বজ্রপাতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিন রাত পোহাতেই মৃত্যুদূত একে একে কেড়ে নিয়েছে ৮টি তাজা প্রাণ। ফলে সেখানকার আকাশ যেন বৈশাখী আনন্দের বদলে বেদনায় ভারি হয়ে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ঝড়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়। সকালে জেলার শাল্লা উপজেলায় মাঠে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের দুই ইউনিয়নে কালবৈশাখী ঝড়ে ৩ জন মারা যান।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে বসতঘরের নিচে চাপা পড়ে মা, ছেলে ও মেয়েসহ একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার ভোররাতে জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলি ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের সোলেমানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা হারুন মিয়ার স্ত্রী মৌসুমী বেগম (৩৫), তার ছেলে হোসেন মিয়া (১) ও মেয়ে মাহিমা বেগম (৪)। এ সময় পাশের ঘরে থাকায় হারুন মিয়া প্রাণে রক্ষা পান।

জগন্নাথপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুশঙ্কর রায় বলেন, ঝড়ে নিহত মা, ছেলে ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তরপ্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নাছিরপুর গ্রামে বোরো ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে বাবা ও ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বাবার নাম মকবুল খাঁ (৫০) আর ছেলে মাসুদ খাঁ (১২)। তাঁদের বাড়ি শাল্লা উপজেলার নাছিরপুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় এ ঘটনা ঘটে।

শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, মাঠে কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে বাবা-ছেলে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে।

এ ছাড়া হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ঝড় ও বজ্রপাত শুরু হলে উপজেলার ২টি ইউনিয়নের তিনজন বজ্রাঘাতে মারা যান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহতরা হলেন বজ্রপাতের সময় হাওরে ঘাস কাটতে যাওয়া ৩ নম্বর দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়নের তাতারী মহল্লা গ্রামের আক্কল আলীর ছেলে মো. হোসাইন (১২), একই ইউনিয়নের জাতুকর্ণপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে ঝুমা বেগম (১২) এবং ৮ নম্বর খাগাউড়া ইউনিয়নের এড়ালিয়া গ্রামের শামসুল মিয়ার পুত্র আলমগীর মিয়া (২৬)।

বানিয়াচং উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মলয় কুমার দাশ জানান, নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহয়তা দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts