রেজাউল করিম: গত (১৮ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুরে ডেল্টা মোড় এলাকার বাসায় গোসল শেষে রুমের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল শিশু আরিয়ান। কয়েক মিনিট পরে উধাও হয়ে যায় শিশুটি।
আরিয়ানের পরিবার আর তাকে খুঁজে পায় না। আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুঁজি করার পরেও তাকে আর না পেয়ে আরিয়ানের বাবা আনোয়ার হোসেন কাশিমপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ওই ডায়েরির সূত্র ধরে পুলিশ শিশুটিকে খুজঁতে শুরু করে।
পরবর্তীতে ঘটনার ৫ দিন পর শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পৃথক পৃথক স্থান থেকে শিমু আক্তার (২৬), মুকিম বিল্লা (৪৩) ও রিনা আক্তার (৩৮) কে গ্রেপ্তার করে।
শিমু আক্তার ঝিনাইদহের ঝিনাইগাতী উপজেলার ভারুদা গ্রামের মৃত মামুন মিয়ার স্ত্রী, মুকিম বিল্লা জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার গোওয়ালগাঁও গ্রামের রেজাউল করিম মাস্টারের ছেলে এবং রীনা আক্তার ফরিদপুর সদর উপজেলার কবিরপুর গ্রামের আবদুল হাই বিশ্বাসের মেয়ে। এরা তিনজনই কোনাবাড়ি কাশিমপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
শিশু আরিয়ানের পিতা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার সন্তানকে যে চুরি করেছে তাকে আমি চিনি না। তবে পরে জানতে পারলাম আমি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করি ওই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ তলায় কাজ করেন উনি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপংকর রয় জানান, সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে পুলিশ শিশুটিকে খুঁজতে শুরু করে। পরে শনিবার রাতে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শিমু আক্তার শিশুটিকে চুরি করে এনায়েতপুর জেলখানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিল মুকিম। পরে বাচ্চাটি চাহিদার থেকে বড় হওয়ায় ভূয়া অ্যাভিডেভিড করে ৫০ হাজার টাকায় মুকিম ও রিনার কাছে শিশুটিকে বিক্রি করে দেয় শিমু। মূলত মুকিমের একটি বাচ্চা প্রয়োজন ছিল। এজন্য শিমুর কাছে একটি বাচ্চা চায়। সেই মোতাবেক শিশুটি চুরি করে শিমু।
তিনি আরও জানান, ৫০ হাজার টাকায় শিশুটি বিক্রি করে নগদ ৩০ হাজার টাকা পায়। শিশুটি উদ্ধারের সময় শিমুর কাছ থেকে ১৫ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়। পরে রোববার আসামিদের আদালতে নিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত মুকিম ও রিনার ১ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে। আর শিমু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় তাকে রিমান্ড দেওয়া হয়নি। শিশুটি থানা হেফাজতে রয়েছে। আদালতে মাধ্যমে তাকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।